শিরোনাম
◈ চাঁদের মাটি খুঁড়ে ‘বিশেষ’ নমুনা নিয়ে ফিরছে চ্যাং ◈ প্রধানমন্ত্রী সেন্টমার্টিন নিয়ে যে আশঙ্কা করেছেন, সেটা অমলূক নয়: কাদের ◈ ঈদ উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা বিনিময় সোমবার ◈ আসুন ঈদুল আজহার ত্যাগের চেতনায় দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করি: প্রধানমন্ত্রী ◈ মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সেন্টমার্টিন পরিদর্শন বিজিবি মহাপরিচালকের ◈ প্রধানমন্ত্রীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মো‌দি ◈ আজ জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজিরা ◈ রাজধানীতে ঈদের দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ রাফাহ’য় হামাসের সফল হামলা, ৮ ইসরায়েলি সেনা নিহত ◈ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পান্থপথে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত : ২৩ মে, ২০২৪, ০৪:২৭ দুপুর
আপডেট : ২৩ মে, ২০২৪, ০৪:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অবনতি ঘটেছে, সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন: সিপিডি

সালেহ্ বিপ্লব: [২.১] সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) হিসেবে, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ডিসেম্বরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা দশ বছর আগে ছিল ৪২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। 

[২.২] এর সঙ্গে পুনঃতফসিল ঋণসহ কু-ঋণ যোগ করলে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯২২ কোটি টাকায়। আর অর্থ ঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলার বিপরীতে অনাদায়ী ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৭ কোটি টাকার ঋণ যোগ করলে মোট অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ৫৬ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।

[৩] বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানী একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সামনে কি’ শীর্ষক এক সেমিনারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এসব তথ্য দিয়েছে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। সঞ্চালনায় ছিলেন সংস্থার ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান।

[৪.১] ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকিং খাতের স্বাস্থ্যের অন্যতম মূল নিয়ামক হচ্ছে খেলাপি ঋণ। সেটার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে। এ খাতে সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার অনেকখানি ক্ষরণ ঘটেছে। সেই ক্ষরণের কারণে ব্যাংকিং খাত এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের পরও ব্যাংকিং খাতের প্রসার ঘটেছে।

[৪.২] তিনি বলেন, দেশে ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের মাধ্যমে অভিজাত ব্যক্তিরা তাদের লক্ষ্য পূরণে ব্যাংকগুলোকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে। ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক অনিয়মের কারণে মানুষ এখন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন।

[৫.১] তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে। এই অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিনিয়োগ ও সাধারণ মানুষদের লেনদেনের জন্য আর্থিক খাতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুধু ব্যাংকিং খাত নিয়ে আলোচনা করি, নন-ব্যাংকিং খাতেরও সমস্যা কম নয়।

[৫.২] বাংলাদেশ ব্যাংক সংশোধনী বিল ২০০৩ অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন বহাল রাখার সুপারিশ করেন তিনি।

[৬.১] ফাহমিদা খাতুন বলেন, মালিকানা বদলের পর থেকে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ ব্যাংকগুলোয় নানা অনিয়মের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগ ব্যাংক তথ্য প্রকাশ করে না। যেসব তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে তা কতটুকু সত্য তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। 

[৬.২] তিনি বলেন, মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বিকল্প না থাকায় সাধারণ মানুষ ব্যাংক খাতের ওপর আস্থা রাখছে। তবে আর্থিক অবস্থা ব্যাপকভাবে খারাপ হওয়ায় খাতটির ওপর গ্রাহকদের আস্থা কমছে বলেও মনে করছে সিপিডি।

[৭] তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য বেড়েছে ঠিকই কিন্তু তাদের ক্যাশ হোল্ডিংস কমেছে। এ জন্য ব্যাংকগুলো টাকা সংকটে ভুগছে।

[৮.১] প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকগুলোর সমস্ত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ পাচ্ছে না। যারা প্রকাশ করে না, তারা লক্ষ্য পূরণ করতে পারে না। যতটুকু প্রকাশিত হয়, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। 

[৮.২] তিনি বলেন, আর একটি বিষয় হচ্ছে তথ্যের দরজা ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া। আমরা তথ্যের জন্য মিডিয়ার ওপরে নির্ভর করতাম, সেটাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তথ্যের অভাবের কারণে ভুল নীতি গৃহীত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।

[৮.৩] তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের এই অবস্থা থেকে যদি টেনে তুলতে হয়ে, তাহলে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ বিগত দিনে আমরা দেখেছি লাভের ব্যক্তিকরণ এবং ক্ষতির রাষ্ট্রীয়করণ করা।

[৯.১] দুর্বল ও সবল ব্যাংকে একীভূত প্রসঙ্গে সিপিডির বক্তব্য, সরকারি ব্যাংকগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার থেকে বহুবার অর্থ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে বার বার দেওয়া হচ্ছে। শুধু বেসরকারি ব্যাংক যেমন পদ্মা ব্যাংককে টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সেটা রক্ষা হয়নি। এ অবস্থায় সরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

[৯.২] এই প্রক্রিয়া এগিয়ে যদি নিতেই হয়, তাহলে পৃথিবীর স্বনামধন্য এ্যাসেসমেন্ট কোম্পানিকে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়ে আসুন। যদিও বাংলাদেশের ব্যাংকিং স্বাস্থ্য সেটা বিবেচনায় নিলে তারা আগ্রহী হবে কি না, সেটা বড় প্রশ্ন।

এসবি/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়