ফিরোজ আহম্মেদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, খুনিদের বিচার ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে—ড. ইউনুস সরকার হাসিনার পরামর্শে দেশ চালাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের অবসান হবে না।
মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন রেস্টুরেন্টে “কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং একটি সফল গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, চুনোপুটিদের নয়—খুনি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, কামাল ও শামীম ওসমানদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। এ নিয়ে জাতি কোনো টালবাহানা সহ্য করবে না। প্রয়োজনে আরও ১০টি ট্রাইব্যুনাল বসাতে হবে। টাকা না থাকলে জনগণ টাকা দেবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন। বক্তব্য রাখেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, যুব অধিকারের সভাপতি রাকিবুল হাসান রকিব, যুবনেতা মিশন আলী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রায়হান হোসেন রিহান, মাহফুজ রহমান, হালিম পারভেজ ও নাহিদ হাসনান প্রমুখ।
এনসিপি সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলটি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে—এটা আমার কথা নয়, টিআইবি প্রধান তাদের ‘কিংস পার্টি’ বলেছেন। এনসিপি সমর্থিত দুই উপদেষ্টা এখন দেশ চালাচ্ছেন। তারপরও হাসনাত আব্দুল্লারা ড. ইউনুস সরকারের সমালোচনা করছেন। তাদেরও ভুল ভাঙতে শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, যারা হাসিনার মতো স্বৈরশাসককে পরাজিত করতে পেরেছে, তারাই আজ নানা কলঙ্কের তিলক মাথায় নিচ্ছেন, চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হচ্ছেন এবং সমাজে হেয় হচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে—ছাত্রদের কলঙ্কিত করল কারা?
তার অভিযোগ, প্রত্যেক উপদেষ্টা দুর্নীতিতে জড়িত, আখের গোছাতে ব্যস্ত। ডিসি নিয়োগ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই দুর্নীতির ছাপ রয়েছে। বিএনপি–জামায়াতের তকমা লাগানো আমলারা ১৬ বছর পরও নির্যাতিত ও পদবঞ্চিত হচ্ছেন।
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে সরকার শহীদদের সঠিক তালিকা করতে পারে না, তাদের কাছ থেকে জাতি কিছু আশা করতে পারে না। জাতিসংঘের তদন্তে নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ হলেও জুলাই সনদে তা কমিয়ে ১,০০০ করা হয়েছে—কেন ও কীভাবে, তা জাতিকে জানতে হবে।
তিনি গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মাঠে না থাকলে আওয়ামী লীগ অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। ইতিমধ্যে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাই সবাইকে রাজপথে সক্রিয় থাকতে হবে। ১৪ দল ও জাতীয় পার্টি নানা ছুতোয় নির্বাচনে আসতে চাইবে—তাদের প্রতিহত করতে হবে, কারণ তারাও হাসিনার উচ্ছিষ্টভোগী। যেকোনো নামে তাদের নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
তিনি ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ডিসি, এসপি ও ইউএনওদের বিচারের দাবি জানান।