জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরে আবারও মেঘনার করাল গ্রাস দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের চাপে তীর রক্ষা বাঁধে নতুন করে ধস নেমেছে, আতঙ্কে দিন কাটছে হাজারো মানুষের। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর একই সমস্যা হলেও স্থায়ী সমাধান নেই।
সরেজমিনে রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের মাছঘাট এলাকায় দেখা গেছে, মেঘনার উত্তাল ঢেউয়ে বাঁধের একাধিক অংশ দেবে গেছে। অন্তত ১৫–২০টি স্থানে ব্লকের নিচের মাটি সরে গিয়ে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। একই অবস্থা কমলনগরের মাতাব্বরহাট ও লুধুয়া এলাকাতেও; বাঁধের ব্লক সরে গিয়ে নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ২০১৮ সালে ১৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২১ সালে শেষ হয়। কিন্তু নির্মাণের অল্প সময় পর থেকেই বারবার ধস দেখা দিচ্ছে। ইতিমধ্যে মেঘনার ভাঙনে জেলার ২৪২ বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত এক লাখ মানুষ।
বৃদ্ধা উষা রাণী বলেন, “চারবার বসতবাড়ি নদীতে গেছে। এখন ঘরের কাছে ব্লক পড়ছে। রাতে ঘুমোতে পারি না, পানি ঢুকে যাওয়ার ভয় থাকে।”
বাদাম বিক্রেতা ইউসুফ জানান, “প্রতিদিনই ফাটল বড় হচ্ছে, বাঁধ না থাকলে ঘরবাড়ি সব হারিয়ে যাবে।”
স্থানীয়দের মতে, পুরোনো বাঁধ বর্ষা এলেই ঝুঁকিতে পড়ে। এবার অস্বাভাবিক জোয়ার ও তীব্র স্রোতে বাঁধে বড় ফাটল ও ধস নেমেছে। দ্রুত সংস্কার না হলে রামগতি বাজারসহ আশপাশের জনবসতিতে পানি ঢুকে পড়তে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, “নতুন ভাঙনের স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামত শুরু হবে এবং টেকসই সমাধানের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।”