আরমান কবীর, টাঙ্গাইল: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “আমরা পিন্ডির জিঞ্জির ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়।” তিনি বলেন, “মওলানা ভাসানী যেমন পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, তেমনি দিল্লির আধিপত্যবাদ বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর দেড়টায় টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই টাঙ্গাইলের প্রতিটি ইঞ্চি সংগ্রামের সাক্ষী। কৃষকের ঘামে গড়া এই মাটি থেকেই বহু ঐতিহাসিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, যার নেতৃত্বে ছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।”
তিনি আরও বলেন, “ভাসানী শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো উপমহাদেশের অনন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আসামের বাঙালি মুসলমান কৃষকদের জমির অধিকারের জন্য তাঁর সংগ্রাম আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি ছিলেন তৃণমূল রাজনীতির পথিকৃৎ, গণমানুষের নেতা।”
ভাসানীর অবদানের প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে বাঙালির সহাবস্থান যে অসম্ভব তা আগে থেকেই বুঝেছিলেন। কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ইতিহাসে তাঁকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ও মওলানা ভাসানীর নাম উপেক্ষা করে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান নিজেও ভাসানীর রাজনৈতিক ধারার উত্তরসূরি ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেপথ্য কারিগর ছিলেন ভাসানী। তাঁর আদর্শ আমাদের পথ দেখায়। আমরা সেই আদর্শ ধারণ করে এনসিপিকে দেশের সামনে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার, আজাদ খান ভাসানী ও টাঙ্গাইল জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেলসহ বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
পথসভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গাজীপুর জেলার উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইল ত্যাগ করেন।