বেনাপোল প্রতিনিধি: কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে নাসিরের খামারে এবার গবাদি পশুর পাশাপাশি উট ও দুম্বা মোটা,তাজাকরনে যুক্ত হয়েছে খামারীরা। যা কোরবানির চাহিদা পূরনে বড় ভুমিকা রাখছে। এদিকে সীমান্ত পথে গরু পাচারসহ নানান ধরনের চোরাচালান বর্তমানে কমে আসায় গবাদী পশু খামার করে অনেকে যেমন ভাগ্য পাল্টিয়েছে তেমনি সীমান্ত উত্তেজনা কমেছে। নাসির ছাড়াও সীমান্তের অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকেরা গবাদি পশু পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তবে গরুর দাম কিছুটা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও উটের দাম হাকা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ। এতে কেবল দেখে ফিরছে ক্রেতারা। তবে কোথা থেকে আসলো এসব উট তথ্য নেই প্রানি সম্পদ কর্মকর্তার কাছে।
সীমান্ত ঘুরে দেখা যায়, সীমান্তের খামারগুলো ঘুরে দেখা যায়, গরু খামারগুলোতে মাথার উপর ঘুরছে ফ্যান আর নিচে বিছানো কারপেট। সময় নিয়ন করে চলছে গোসল,পুষ্টিকর খবার আর স্বাস্থ্য পরীক্ষা। কোরবানিকে সামনে রেখে এমন মাতৃস্নেহে বেনাপোল সীমান্তে প্রতিটা খামারে গরু মোটা,তাজাকরনে কাজ করছেন খামার ব্যবসায়ীরা। খামারে উট দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে স্থানীয়রা। তবে গো খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রনে থাকলে উদ্যোগতারা আরো এগিয়ে আসবেন বলছেন সংশিষ্টরা।
বেনাপোল সীমান্তের পুটখালিতে সবচেয়ে বড় গবাদী পশু খামার রয়েছে আলোচিত ও সমালোচিত ব্যক্তি নাসিরের। যেখানে আগের বছর গুলোতে কেবল এ খামারে গরু,ছাগল,দুম্বা ও ভেড়া থাকলে এবছর কোরবানি উপলক্ষে যুক্ত হয়েছে ৭টি মরুভুমির দেশের উট। নাসির কয়েক বছর আগেও গরু পাচারসহ স্বর্ন, অস্ত্রের চোরাচালান পেশায় যুক্ত ছিল। স্বর্ন ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলাও হয় তার নামে। তবে সীমান্ত কড়াকড়ির কারনে চোরাচালান কমে আসায় এখন সে নিজেই ভারত সীমান্তের শুন্য রেখার কাছে তৈরী করে গরু খামার।
প্রথমে সে মাত্র ৩ বিঘা জমিতে শতাধিক গরু নিয়ে খামার তৈরী করলেও বর্তমানে তার খামারে সব মিলিয়ে রয়েছে সহস্রধীক গরু,ছাগল,দুম্বা ও উট। খামারের আয়াতনও বেড়ে দাড়িয়েছে ১৫ বিঘার মত। আগে তার খামারে কেবল গরু ও ছাগল মোটা তাজাকরন করা হলেও চাহিদা বাড়ায় দুম্বা ও উট সংগ্রহ শুরু করে নাসির। নাসিরের খামারে ২ লাখ থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা দামেরও গরু রয়েছে। উট বিক্রী হচ্ছে বড়গুলো ৩০ থেকে ৩৬ লাখের কাছাকাছি ও ছোট উটের দাম হাকা হচ্ছে ২৫ লাখের ঘরে। তবে উটগুলো ভারত থেকে নক অন্য কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে তার সদোত্তর মেলেনির সংশিষ্টদের কাছ থেকে। নাসির ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এরাকায় ভাগ্য বদলাতে এ সীমান্তে আরো অনেক খামার গড়ে উঠেছে। যেখানে নিজের পায়ে দাড়াতে গরু খামার করেছে অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকেরা।
বিস্তারিত জানতে নাসিরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সম্ভব হয়।
নাসিরের খামারের ম্যানেজার আলামিন জানান, কোরবানিতে চাহিদা থাকায় গরুর পাশাপাশি উট ও দুম্বা রাখা হয়েছে খামারে। ৭ টা উটের মধ্যে মাত্র একটা বিক্রি করেছেন। তবে উটগুলো ভারত থেকে না অন্য কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে তার সদোত্তর মেলেনি তার কাছ থেকে। এছাড়া ভারত থেকে গরু আসা বন্ধের কথা বলা হলেও নাসিরের খামারে ভারতীয় বিভিন্ন জাতের সহস্রধিক গরু দেখতে পাওয়া যায়। তবে তাদের দাবি এসব গরু তারা বাইরে থেকে কিনে এনেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা করিম জানান, তারা আগে টেলিভিশনে মরুভুমির দেশে উট দেখেছেন। আর এখন নাসীরের খামারে উট রয়েছে জেনে দেখতে এসেছেন। অনেকে কিনতেও আসছে। তবে দাম বেশি হাকায় সবাই দেখে ফিরে যাচ্ছে।
বেনাপোলের পুটখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার জানান,গরু পাচার বন্ধ হওয়ায় সীমান্ত বিজিবি,বিএসেফের মধ্যে মাঝে মধ্যে যে উত্তেজনা দেখা দিত তা অনেক কমেছে। অনেক বেকার যুবকও খামার করে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছে।
বেনাপোলের গয়ড়া গ্রামের খামার ব্যবসায়ী শাহআলম জানান, তিনি বিদেশে না গিয়ে তিনি গরু খামার করে স্বাবলম্বি হয়েছেন। তবে খ্যাদের দাম অতিরিক্ত বাড়ায় লাভ করা কঠিন হয়ে দাড়াচ্ছে।
শার্শা উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার সাহা জানান, এবার যশোরের শার্শা উপজেলাতে দুম্বা, উট ছাড়াও ১৪ হাজার ২৬৬ টি গরু ও ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। নাসিরের খামারের উট তিনি দেখে এসেছেন। তবে সেগুলো কোথা থেকে ক্রয় করা হয়েছে সে বিষয়ে তার কাছে কোন তথ্য নেই জানান।