ফারুক আহাম্মদ,ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : কয়েক দিনের টানা বর্ষন এবং উজানের বৃষ্টির কারনে কুমিল্লার গোমতীর পানি বাড়তে শুরু করেছে৷ গত বছরের আগস্টে ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলা।
এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয় দুই উপজেলায়। এদিকে সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে গোমতী নদীর পানি বাড়তে দেখে দুই উপজেলার মানুষের মধ্যে আতংক ছড়াচ্ছে৷ এদিকে বৃহস্পতিবার ( ২৯ মে ) পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র স্থানীয়দের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের ছয়টি জেলায় বন্যা হতে পারে। এসব এলাকার নদনদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি সমতল বাড়তে পারে। সরেজমিনে গোমতী নদীর পাড় ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গোমতী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার অনেক নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীতে পানির স্রোত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এ নিয়ে তীরবর্তী মানুষের মধ্যে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গোমতী চরের চাষিদের মধ্যেও ফসল হারানোর ভয় চেপে বসেছে। উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়, ডোবা ও খাল টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে একটু টুম্বুর হয়ে উঠেছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের মনোহরপুর এলাকার গোমতী তীরবর্তী বাসিন্দা কালাম মিয়া বলেন, গত বছর আমাদের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এই গোমতী। আমাদের পাকা ধান তলিয়ে গিয়ে ছিল। আমরা বাড়িঘরেও থাকতে পারিনি এতোটা ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম আমরা। এবারও গোমতী নদীর পানি বাড়তে দেখে আমাদের মধ্যে সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। গোমতীর চরে আবাদ করা ফসল হারানোর ভয়ে আছি।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর এলাকার বাসিন্দা কাইয়ুম হোসেন বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখছি আবারও বন্যা হতে পারে। গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ক্ষতচিহ্ন এখনো রয়ে গেছে। আবারও যদি আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হই তাহলে আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাইঘর এলাকার বাসিন্দা আবু ইউসুফ বলেন, শুনেছি গোমতী নদীর পানি বাড়ছে, আবারও নাকি বন্যার শঙ্কা রয়েছে। গত বছরের বন্যায় আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সেই ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতে গোমতী নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গোমতী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আপাতত ভয়ের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেন এই কর্মকর্তা।