নোয়াখালী প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামসহ ১৪টি গ্রাম এবং কয়েকটি চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজার এবং চর গাসিয়া, ঢালচর, দমারচরসহ বেশ কয়েকটি চরের রাস্তাঘাট ও দোকানপাট প্লাবিত রয়েছে।
রোববার (২৬ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে এসব গ্রাম ও চর প্লাবিত হয়। জোয়ারের প্রভাবে হাতিয়ায় নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বেড়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।
প্লাবিত হওয়া গ্রাম গুলো হলো, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের মোল্লা গ্রাম, মুন্সি গ্রাম, আদর্শ গ্রাম, বান্দাখালী গ্রাম, ডুবাইয়ের খাল গ্রাম, ইসলামপুর গ্রাম, আনন্দগুচ্ছ গ্রাম,নবাতায়ন গ্রাম, বসুন্ধরা গ্রাম ও ধানসিঁড়ি গ্রাম, পূর্বাচল গ্রাম, হরণী ইউনিয়নের চর ঘাসিয়া, বয়ারচর গ্রাম, নলচিরা ইউনিয়নের তুফানিয়া গ্রাম, তমরদ্দি ইউনিয়নের পশ্চিম তমরদ্দি গ্রাম।
স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান ও সুজন বলেন, সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে পুরো উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ফলে এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে বাড়িগুলোতে। আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় আতঙ্কে রয়েছেন চরগাসিয়ার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আলম বলেন, নিঝুম দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। ইউনিয়নটির সাগরের একবারে কাছে হলেও নেই কোনো বেড়িবাঁধ। যার ফলে জোয়ারের সময় চারদিক দিয়ে একসঙ্গে এই ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার মো.দিনাজ উদ্দিন বলেন, রোববার দুপুর থেকে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ ঘর বন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে ভেসে গেছে গবাদিপশুর খাদ্য ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে শাকসবজিসহ নানা ফসলের জমি। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্রায় প্লাবিত হয়।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা বলেন, জোয়ার পানিতে হাতিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। হাতিয়ার বিভিন্ন নৌ রুটে সি-ট্রাক, ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের জানমাল ও নিরাপত্তার স্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত হাতিয়ার সঙ্গে সব চলাচল বন্ধ থাকবে। হাতিয়াতে ২৪২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :