শিরোনাম
◈ অর্থনৈতিক সংকটে সিংহভাগ মানুষ কোরবানি দিতে পারেনি: জিএম কাদের ◈ সুপার এইটে স্থান, ক্রিকেট দলকে রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন ◈ ফিলিস্তিনসহ সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির ◈ শাসকগোষ্ঠী উল্লাসের ঈদ করছে আর বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসায় চলছে শোকের মাতম: রিজভী  ◈ কারাগারে গরু ও খাসি কোরবানি, বন্দিদের বিশেষ বিনোদনের ব্যবস্থা ◈ দেশবাসীকে ভয়ভীতি কোরবানি দেওয়ার আহ্বান মির্জা আব্বাসের ◈ এবারের ঈদ দেশের মানুষের কাছে একটা কষ্টের দিন: মির্জা ফখরুল ◈ ঈদুল আজহা উপলক্ষে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর ◈ ভারতে ফ্রিজে গরুর মাংস পাওয়ায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ১১টি বাড়ি ◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৫০ বছরের পেট্রোডলার চুক্তি বাতিল করল সৌদি আরব

প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৪, ০৪:২৯ দুপুর
আপডেট : ২৬ মে, ২০২৪, ০৪:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যানজট, বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্ত হয়ে প্রাণ ফিরে পেয়েছে মেয়র আনিসুল হক সড়ক

সুজন কৈরী: [২] রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কের একটি ‘তেজগাঁও সাতরাস্তা-রেলগেট’ সড়ক। কিছুদিন আগেও সেটি ছিল পুরোপুরি ট্রাক-ভ্যানের দখলে। সড়কের দুই পাশে সারি সারি ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। এতে সৃষ্টি হতো যানজট ও বিশৃঙ্খলার। 

[৩] মেয়র আনিসুল হকের নামে নামকরণ করা এ সড়কটি তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের প্রচেষ্টায় হয়েছে পুনরুদ্ধার। কমেছে লাখো মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি। সড়কটি সাতরাস্তা হয়ে কারওয়ান বাজার, তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট ও তেজগাঁও, মহাখালী, বনানী, গুলশান, নিকেতন, হাতিরঝিল এবং রামপুরার সঙ্গে যুক্ত। 

[৪] সাতরাস্তা থেকে রেললাইন পর্যন্ত সড়কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বহু বছরের ট্রাকস্ট্যান্ডটি ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর উচ্ছেদ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হক। যে কারণে সে সময় বিক্ষুব্ধ চালক ও শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি, হতে হয় অবরুদ্ধ, নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি। 

[৫] তখন দখলদারদের ইটপাটকেল আর পুলিশের টিয়ারশেলের মধ্য দিয়ে সড়কটিকে ‘পার্কিংমুক্ত’ করে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেন তিনি। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেকে ফের দখলদারদের হাতে চলে যায় সড়কটি। 

[৬] ফার্মগেট-তেজগাঁও ঘিরে রয়েছে এক ডজন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ সড়ক হয়ে জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট, সংবাদপত্র ভবন, ছাপাখানা, প্রধান কার্যালয়সহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং সাধারণ মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন। 

[৭] জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৩,৫০০-৪,০০০ ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের চলাচল হয় এই রাস্তায়। রয়েছে এসেনসিয়াল ড্রাগস, বিজি প্রেস, বিসিকসহ প্রায় ১০টি কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান। অথচ তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের পার্কিং ক্ষমতা মাত্র ৭০০ এর কাছাকাছি। 

[৮] এই বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. মনির তালুকদার বলেন, আমরা জায়গার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি, টিএনটির জায়গা আমাদের দিয়ে দিলে এই সমস্যা থাকবে না। আর আমরা ট্রাফিক পুলিশকে সবসময় সহায়তা করে আসছি এবং করবো।

[৯] ইউসিবি শুলশান ব্রাঞ্চে কর্মরত ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, গত সপ্তাহ থেকেই এই রাস্তাটি পরিষ্কার থাকায় আমি ১৫ মিনিটে ফার্মগেট থেকে গুলশান অফিসে চলে যেতে পারছি। এরকম ফাঁকা আগে দেখিনি। বছরের পর বছর যে সড়ক ছিল অবহেলিত, ট্রাফিক পুলিশের কাজে সেটি ফিরে পেয়েছি যান চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা।

[১০] বিআরবি হসপিটালস লিমিটেডের ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার আরাফাত সৌরভ জানান, গত কয়েকদিন ধরেই আমি অবাক হচ্ছি, কেননা গত কয়েক বছরে এত পরিষ্কার কখনও দেখিনি, আশা করি এই অবস্থা বিদ্যমান থাকবে। 

[১১] সরিজমিনে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে সিটি কর্পোরেশন প্রায় ৭ ফুট জায়গা নিয়ে করেছে রিকশার লেন। এই পথে চলবে অযান্ত্রিক যান। তবে, বাস্তবতা ভিন্ন। 

[১২] স্থানীয় ব্যবসায়ী আলম বলেন, রিকশার জন্য যে রাস্তা দেয়া হয়েছে সেখানে প্রকৃত পক্ষে রিকশা তো চলই না, এতে করে রাস্তাটা অকার্যকর হয়ে গেছে। 

[১৩] ট্রাফিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহত্তর স্বার্থে এটি অপসারণ করতে ট্রাফিক বিভাগ থেকে সিটি কর্পোরেশনকে অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। 

[১৪] তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ থেকে জানানো হয়, তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের ধারণক্ষমতা ৬৫০-৭০০ গাড়ির, অথচ প্রতিদিন প্রায় ৫ গুণ ট্রাক কাভার্ডভ্যানের যাতায়াত হয় এই রাস্তায়। শুক্রবার শনিবার অফিসিয়াল ট্রিপ না থাকায় সব গাড়ি বৃহস্পতিবার রাতে এসে শনিবার পর্যন্ত এখানে অপেক্ষা করে। 

[১৫] এছাড়াও ট্রাক কাভার্ডভ্যানের রুট পারমিট সারা বাংলাদেশ হওয়ায় সারাদেশ থেকেই ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং পিকআপ রাত ১০টার পর থেকে এই এলাকায় এসে জড়ো হয়। কেপিআইভুক্ত এলাকা হওয়ায় দিনের বেলায়ও কিছু ট্রাক কাভার্ডভ্যান এই কেন্দ্রিক অবস্থান করে। 

[১৬] ডিএমপি’র ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, সড়কটি পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে আনিসুল হক অনেক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন। তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের ধারণ ক্ষমতা ৭০০-৮০০। কিন্তু ট্রাক আসে প্রায় ৪ হাজার। এখানে কিছু গ্যারেজ ছিল, যেখানে ট্রাক ঠিক করতো, কিছু নষ্ট ট্রাক এখানে পড়ে থাকতো এবং অনেক ট্রাক এখানে রেস্টে থাকতো। এসব কারণে এ রাস্তায় কেউ আসতে চাইত না।

[১৭] তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক কম থাকে। ট্রাক মালিক সমিতির অনুরোধে রাতে আমরা এই সময় এখানে ট্রাক থাকার সুযোগ দেবো। শুক্র ও শনিবার সড়কে গাড়ির চাপ কম থাকে, তাই এক লেনে এ ছুটির দিনে আমরা ট্রাক থাকার সুযোগ দেব।

[১৮] তেজগাঁও ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার স্নেহাশীষ কুমার দাস বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ আলোচনা করে মেয়র আনিসুল হক সড়ক শতভাগ পরিষ্কার রাখছি, সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ থেকে আজকের এই অবস্থা ধরে রাখতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

[১৯] শুধু আনিসুল হক সড়কই নয়, ট্রাফিক পুলিশের পরিকল্পনায় রয়েছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার কিছু রাস্তা, যা ওয়ানওয়ে করার মাধ্যমে সামগ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও উন্নত করার। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়