নিজস্ব প্রতিবেদক: [২] অবশেষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠকে বসেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১২ টার দিকে রুদ্ধশ্বাস এ বৈঠকে বসেন তিনি।
[৩] জানা গেছে, বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনের ১২৯ নম্বর কক্ষে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ কয়েকজন নেতা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন ১০ জন। তাদের মধ্যে দুই জন অনশনকারী। তারা হলেন, কাজল দাস ও জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব।
[৪] এক ঘণ্টার এ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল।
[৫] তিনি জানান, শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক। শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া আদায়ে আরো আলোচনা করতে চান। এসময় মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙ্গার অনুরোধ করেন।
[৬] এর জবাবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বাকি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি রবিবার জানানো হবে।
[৭] শফিউল আলম নাদেল আরো জানান, যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলনে যুক্ত সেসব শিক্ষার্থীর যে কোনো সমস্যা দেখবেন বলে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন। তিনি জানান, লিখিতভাবে সব দাবি-দাওয়া জমা দিলে সেসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীর সহযোগিতা থাকবে।
[৮] উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে শফিউল আলম বিস্তারিত জানাতে পারেননি।
[৯] এর আগে শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাতে নিজ বাসভবনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী।
[১০] জানান, প্রয়োজনে তার প্রতিনিধিদল শাবিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা যখন কথা বলতে রাজি হবে তখনই প্রতিনিধি যেতে পারবে। পারিবারিক কারণে এখন তিনি নিজে সিলেটে যেতে পারছেন না।
[১১] উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে উত্তাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
প্রেক্ষাপট
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ।
এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন নামেন।
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শনিবার দুপুরে কাফন পরে ক্যাম্পাসে মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় দেন গণ-অনশনের ঘোষণা।
আপনার মতামত লিখুন :