জেরিন আহমেদ: [২] তসলিমা নাসরীন ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চারদিকে। প্রচার হোক যে আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান গবেষণার কাজে। কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনে কারও জীবন বাঁচুক। কারও চোখ আলো পাক। প্রচার হোক, কিছু মানুষও যেন প্রেরণা পায় মরণোত্তর দেহ দানে।
অনেকে কবর হোক চান, পুড়ে যাক চান, কেউ কেউ চান তাঁদের শরীর পোড়া ছাই প্রিয় কোনও জায়গায় যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ আশা করেন তাঁদের দেহ মমি করে রাখা হোক। কেউ আবার বরফে ডুবিয়ে রাখতে চান, যদি ভবিষ্যতে প্রাণ দেওয়ার পদ্ধতি আবিষ্কার হয়!
অসুখ বিসুখে আমি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করি এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত করবো। কোনও প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আমার বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই, ঠিক যেমন বিশ্বাস নেই কোনও কুসংস্কারে। জীবনের একটি মুহূর্তেরও মূল্য অনেক। তাই কোনও মুহূর্তই হেলায় হারাতে চাই না। মরার পর আমরা কিন্তু কোথাও যাই না। পরকাল বলে কিছু নেই। পূনর্জন্ম বলে কিছু নেই। মৃত্যুতেই জীবনের সমাপ্তি। আমার জীবন আমি সারাজীবন অর্থপূর্ণ করতে চেয়েছি। মৃত্যুটাও চাই অর্থপূর্ণ হোক।’
[৩] এই স্ট্যাটাস দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ফেসবুক তাকে মৃত ঘোষণা করে তার আইডিতে রিমেম্বারিং ট্যাগ লাগিয়ে দেয়।
[৪] মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টুইটারে তসলিমা নাসরীন জানান দেন, তিনি বেঁচে আছেন।
[৫] ফেসবুককে উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেন, আমি খুব ভালোভাবে বেঁচে আছি। কিন্তু তোমরা আমাকে স্মৃতির পাতায় নিয়ে গেছো। কী দুঃখজনক সংবাদ! তোমরা কীভাবে এটা করতে পারলে? দয়া করে আমার ফেসবুক একাউন্ট ফেরত দাও।
[৬] সাধারণত ফেসবুকে অ্যাকাউন্টধারী কেউ মারা গেলে এটা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হয়। তথ্যদানকারীদের প্রোফাইল বিশ্বাসযোগ্য হলে ফেসবুক তথ্যটি গ্রহণ করে এবং মৃত ব্যক্তির একাউন্টে রিমেম্বারিং ট্যাগ লাগিয়ে দেয়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব