রুশাদ ফরিদী: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় যেসব ব্যাপার পত্রিকার রিপোর্টে এসেছে: ঘটনার কারণ কী? ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের খাদ্য ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগ নেতারা প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। ৩০ নভেম্বর দুপুরে ছাত্রলীগ নেতারা ওই শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন।’ এই গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী ছাত্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ানের নাম এসেছে। কী ঘটেছিলো সেই দিন?
‘৩০ নভেম্বর বিকেলে অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর পর অভিযোগ আসে, ওই দিন সকালে কুয়েট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লাঞ্ছনা ও অপদস্তের শিকার হওয়ার পর তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সাদমান নাহিয়ানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্যাম্পাসের রাস্তায় ড. সেলিম হোসেনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছেন, তর্কবিতর্ক করছেন। পরে তাঁরা তাঁকে অনুসরণ করে তড়িৎ প্রকৌশল ভবনে শিক্ষকের ব্যক্তিগত কক্ষে প্রবেশ করেন। তাঁরা প্রায় আধাঘণ্টা কক্ষের ভেতর অবস্থান করে বেরিয়ে যান। পরে অধ্যাপক সেলিম বের হয়ে বাসায় যান।’
সেলিম হোসেনকে শৈশব থেকেই জীবন সংগ্রামে জড়িয়ে পড়তে হয়। ‘চার ভাইবোনের সংসারে বাবাকে সহায়তার জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি দোকানেও কাজ করতেন। ফল বিক্রি করতেন।’ এই অভাব দারিদ্র্যকে পরাজিত করে তাঁর পেশাগত সাফল্য: ‘এরপর কুয়েটে ভর্তি হন। পড়াশোনা শেষে সেখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর বৃত্তি নিয়ে জাপানে এক বছর এবং পরে অস্ট্রেলিয়ায় চার বছর পড়াশোনা করেছেন। তিনি ছিলেন কুয়েটের একমাত্র ক্রিপ্টোগ্রাফিতে পিএইচডি করা অধ্যাপক। তাঁর ওপর ভিত্তি করে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে একটি নতুন ল্যাব তৈরির পরিকল্পনা ছিলো।’ প্রবাসের উন্নত জীবনের প্রলোভন ছেড়ে আসা একজন সংগ্রামী মেধাবী শিক্ষকের এই পুরস্কার? ফেসবুক থেকে