আফসান চৌধুরী: ১৯৬৯ সাল। আমরা কেবল স্কুল শেষ করে কলেজে উঠেছি, সাহিত্যে আগ্রহী ভীষণ, পত্রিকা বের করার প্ল্যান করছি। এই সময় টিভিতে বই ও সাহিত্য নিয়ে একটি অনুষ্ঠান হতো। করতেন প্রফেসর মুনীর চৌধুরী। এমন অসাধারণ অনুষ্ঠান দেখিনি আর। খুব নাটকীয়তার সঙ্গে করতেন, দারুণ লাগতো সবার। [২] একদিন তিনি পরিচয় করিয়ে দিলেন ‘আন্তজা ও একটি করবী গাছ’ বইটি, লেখক হাসান আজিজুল হক। এমনভাবে কোনো বই আলোচনা করা যায় ভাবা যায় না। লেখকের গল্পগুলো যেন জীবন্ত হয়ে সামনে হাজির। অসম্ভব প্রশংসা করলেন তিনি। পরদিন কলেজে গিয়ে আমার বন্ধুবান্ধবদের বললাম। তখনই ছুটলাম নিউমার্কেট, বইটা কিনে সেদিনই পড়া শেষ করে, তারপর কথা। আজীবন ভক্ত হয়ে গেলাম তার লেখার।
[৩] আমরা ‘পূর্বপত্র’ নামের একটা লিটল ম্যাগাজিন বের করতাম, তাতে তাঁকে নিয়ে নিয়মিত আলোচনা থাকতো, সাক্ষাৎকার দেন একাধিকবার। আমরা হাসান ফেরদৌস, খান মোহাম্মদ ফারাবী, মনজুরুল হক, আমি ও অন্যরা যে ইঁচড়ে পাকা প্রায় বেয়াদব প্রাণিকুল এটা তিনি মেনে নিয়েছিলেন বোধহয় তাই সম্পর্কটা সহজ ছিলো। হয়তো তিনি মাস্টার বলেই ছাত্রদের পাকামো সহ্য করতেন। [৪] আমাদের অনেকের ওপর তার লেখার প্রভাব ও অতুলনীয় কিছু বর্ণণা আছে তাঁর যা অন্যদের লেখায় নেই। অজান্তেই তাঁর ছায়াটা পড়ে আমাদের অনেকের লেখার ওপর। যে সম্মান নিয়ে জীবন কাটিয়েছেন, সেটা নিয়ে গেলেন। ভালো থাকবেন হাসান ভাই। লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক