খাজা নিজাম উদ্দিন : ধরুন বাংলাদেশে সিভি লেখা নিয়ে বেশ বড়সড় ঝামেলা ছিলো। একটা সমাধান দিয়েছিলাম ২০১৭ সালে। প্রথম ৬ মাসে ডাউনলোড করেছিলো ৫০ হাজার। এরপরের হিসাব আরো অনেক। সেটা ফ্রি ছিলো। সেটা ছিলো আমার একটা প্রজেক্ট এবং সেটা দারুণ সফল। এখন বাংলাদেশের সিভিগুলো এবং ২০১৭ সালের আগের সিভিগুলো মিলিয়ে দেখতে পারেন। সিভি মেকারসরাও বাধ্য হয়েছেন মানুষকে ভালো কিছু দিতে। তবে সেই সিভিগুলো যদি দেখেন- দেখবেন ২০১৭ সালে আমরা যে মডেল দিয়েছিলাম, তার পুরো ছাপ পাবেন। প্রশ্ন হচ্ছে একটা সমস্যার আপনি সমাধান করবেন কীভাবে? আমরা প্রফেশনাল ল্যাঙ্গুয়েজে যেটাকে বলি- How to attack a problem to get the solution তা করতে হবে। সেখানেও প্রশ্ন আছে- সাফল্য নির্ভর করে আপনার Problem Attack-এর স্ট্রাটেজির ওপর। বাংলাদেশে মানব সম্পদের অবস্থা ভালো নয়। ভালো হওয়ার কোনো কারণ নেই। যেদেশে শিক্ষকরা রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সেদেশে মানব সম্পদের আশাটা একটা দূরাশা।
আরো বহুবিধ কারণ আছে। এখন সমাধান কী? এই ধরুন, এই করোনাতেও গ্রাম আর শহরে শিক্ষার মান তো কমেছে, তবে গ্রামের বা জেলা শহরের ছেলেমেয়েরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কীভাবে দ্রত শিক্ষার বৈষম্য বা মানব সম্পদের বৈষম্য কমানো যায়? আগের মতো চিন্তা করলে ৩০/৪০ বছরের প্ল্যান করতে হবে। তবে প্রযুক্তিকে ঠিকভাবে ব্যবহার করলে আমরা সেটি কমিয়ে আনতে পারি। দুনিয়ার সেরা স্কিলসগুলোকে দ্রত ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। সেরা শিক্ষার উপকরণ আর উপায়, কৌশল সব যদি আমরা একদম গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারি। শিক্ষার উপকরণে যদি আমরা শুধু হার্ডকপির ওপর নির্ভর করি, এ জাতি আরো ডুববে। সমাজের সুবিধাভোগী একটা অংশ শুধু এগিয়ে যাবে, বাকিরা যোজন যোজন দূরে চলে যাবে। ই-বুক নিয়ে একটা ক্যাম্পেইন করছি। সরকারের উচিত এই কাজটি করা, বাংলা একাডেমির উচিত সব কিছু ই-ভার্সন করে একদম ফ্রি করে দেওয়া।
বাংলা একাডেমির সবকিছু উন্মুক্ত করে দিতে হবে, যাতে প্রান্তিক মানুষটিও সেখান থেকে সুবিধা পেতে পারে। আমরা যতো দ্রত সেরা বইগুলো ই-বুক করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবো, বৈষম্য কমার সম্ভাবনা বাড়বে। আর সঙ্গে যদি অনলাইন প্রশিক্ষণগুলো চলতে থাকে- যেমন আমাদের শিক্ষকদের অনলাইনের নতুন এই দুনিয়াতে কীভাবে শিক্ষাদান করতে হবে, সারা দেশের শিক্ষকদের বিভিন্ন জায়গায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে না এনে সেই টাকার অনেক কম খরচে তাদের অনলাইনে অব্যাহতভাবে প্রশিক্ষিত করা যায়। বাংলাদেশের জন্য এখন ই-বুক অপরিহার্য হয়ে পড়ছে। হার্ডকপি দিয়ে সামান্য সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। আমাদের ই-বুক দিয়ে দ্রত প্রান্তিক অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের কাছে পৌঁছে যেতে হবে। একজন নাগরিক হিসেবে আমি ই-বুক নিয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করছি। আশা করছি আরো অনেকে এগিয়ে আসবেন। তবে মূল কাজটা সরকারকে করতে হবে। Khaza Nizam uddin-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।
আপনার মতামত লিখুন :