মোহাম্মাদ এ হালিম : তরুণরা গবেষণার বিষয় নিয়ে অনেক উদ্যমী ও প্রাণবন্ত থাকে। শুরুতেই এমনই থাকা জরুরি। তরুণরা অনেককিছু নিয়ে কাজ করতে চায়, যদিও সেসব কাজের অনেক কিছুই অনেকবছর আগেই সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু সায়েন্টিফিক জার্নালের বিষয়ে তাদের আ্যাকসেস না থাকায় এবং গবেষণা ক্ষেত্রে সার্চ করা ও অনান্য অভিজ্ঞতা না থাকায় সে বিষয়গুলো তাদের সামনে থাকে না। ফলে পুরাতন টপিককে তারা নতুন মনে করে। শুধু তরুণদের ক্ষেত্রে নয়, আমি বাংলাদেশের অনেক সিনিয়র গবেষককে দেখেছি তারা বিশ-ত্রিশ বছরের পুরাতন জিনিস নিয়েই কাজ করছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে বা ছোট জার্নালে তা প্রকাশ করছেন।
কিছুদিন আগে আমাদের এক তরুণ গবেষক প্যারাসিটামল নিয়ে হয়ে যাওয়া একটি কাজের ওপর বিশাল কম্পিউটেশনাল কাজ করে আমার কাছে পাঠালো আমি ওই কাজটির ব্যাপারে স্বাভাবিকভাবেই আগহী ছিলাম না তার পীড়াপীড়িতে নতুন কিছু ডেরিভেটিভ দিলাম এবং ওইগুলোর মধ্যে সিমুলেশনে একটি বেশ ভালো রেজাল্ট দিলো। আমি তাকে ওই যৌগটি সিন্থেসিস করার পরামর্শ দিলাম। বিভিন্ন কারণে সেটি করা তার পক্ষে সম্ভব হলো না। আর সিন্থেসিস না হওয়ায় আমি ওই কাজটি নিয়ে আর আগ্রহ প্রকাশ করিনি। এতে ওই বিষয়ে তরুণ গবেষকের মনোক্ষুণ্ন হওয়া স্বাভাবিক।
কিন্তু কেউ অনেক পরিশ্রম করলেই নতুন নয় এমন কোনো বিষয়ে পেপার পাবলিশ করতে হবে বলে আমি মনে করি না।
আমাদের দেশের তরুণ গবেষকের প্রধান সমস্যা হলো তারা দ্রুত যেনতেনভাবে একটি পেপার পাবলিশ করতে চায়। অনেকে মনে করেন যেনতেনভাবে একটি পেপার পাবলিশ করলেই মাস্টার্স, পিএইচডি এডমিশন হয়ে যাবে। যদিও বিশ্বের ছোট ও বড় সকল গবেষকের ইচ্ছা হলো তাদের গবেষণা কর্মকে প্রকাশ করা। কিন্তু এ বিষয়টিতে নিয়তের বিশাল পার্থক্য রয়েছে। বড় বড় গবেষকরাও প্রতি বছর অনেক পেপার পাবলিশ করেন কিন্তু তারা তাদের প্রতিটি কাজকে স্ব-মূল্যায়ন করেন। গবেষণার কোয়ালিটির ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব রিভিউর মানদণ্ড, পিয়ার রিভিউর মানদণ্ড থেকে বেশি থাকে। পিয়ার রিভিউয়াররা পেপারের কোয়ালিটির ক্ষেত্রে ভুল করতে পারেন কিন্তু ডাকসাইটে গবেষকরা নন। স্বমূল্যায়নের এই ধারাটি পশ্চিমা গবেষকদের মাঝে প্রবলভাবে থাকার কারণে তারা গবেষণায় এখনো নেতৃত্ব প্রদান করছে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :