শিরোনাম
◈ ইরানের ইস্পাহানে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান

প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৩১ রাত
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৩:৩১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকন রেজা: অপুর আত্মহত্যা, শওকতের ক্ষোভ ও ‘ঝাঁকের কৈ’

কাকন রেজা: অপু আত্মহত্যা করেছে। শওকত তার নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে। রবীন্দ্র নামের অদ্ভুত বিশ্ববিদ্যালয়ে অদ্ভুত নিয়ম করা হয়েছে চুল বিষয়ে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যিনি আমার মমতাময়ী নারীও ক্লাসের দরোজায় দাঁড়িয়ে থাকেন কাঁচি নিয়ে শিক্ষার্থীদের চুল কাটতে। পার্টটাইম নাপিত আর কী। এসব দেখে অনেকে মর্মাহত হয়েছেন, অবাকও হয়েছেন কেউ কেউ। সামাজিকমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। কলামও লেখা হয়েছে। কিন্তু আমি এতে মর্মাহতও হইনি, অবাকও না। কারণ, এ ঘটনা নতুন নয়। এ গত সপ্তাহেই আরও দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর আগে কৃষকরা নিজের ধানক্ষেতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন, ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায়। ভাঙা রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ করেছে মানুষ। কই কিছু হয়েছে? কোথাও কোনো টনক নড়েছে? নড়েনি। সঙ্গে আমরাও অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই অভ্যস্ত হওয়ার গুণটাই আমাদের ডুবিয়েছে। আমার সব কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে যাই। ওই রাস্তায় ছিনতাই হয়, রাতের বেলায় যাই না।

তেলের দাম বেড়েছে, গিন্নিকে বলি, রান্নায় তেলের ব্যবহার কমিয়ে একটু ম্যানেজ করে নিও। অবশ্য তেলের বিশেষ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কমানোর কোনো কথা নেই, বরং যতোটা বাড়ানো যায়। যাকগে, তেলের ব্যবহার কমিয়ে তেলের বাড়তি দামে অভ্যস্ত হয়ে যাই। জ্বালানি তেল কিনি দ্বিগুন, তিনগুন দামে, গাড়ির ভাড়া বাড়িয়ে মালিকেরা অভ্যস্ত হয়ে যান। আমরা অভ্যস্ত হই নিজের একটা ওষুধ বা প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা কমিয়ে। গণমাধ্যম পরীমনির খবর বেঁচে, আমরা কিনে খাই। আমরা সকল সমস্যা পেছনে রেখে পরীমনিতে অভ্যস্ত হয়ে যাই। মূলত আমরা সবকিছুতে অভ্যস্ত হয়ে যাই। আর আমাদের অভ্যস্ত হওয়াতে যারা অপকর্মগুলি করেন তারাও অপকর্মে অভ্যস্ত হয়ে যান। তাদের কানাডায় বেগমপাড়ায় বাড়ি হয়, লিমুজিন গাড়ি হয়, বউয়ের সঙ্গে বাড়তি নারী হয়। তারা এসবে অভ্যস্ত হয়ে যান।

আর আমরা অভ্যস্ত হই টাকা বাঁচাতে পায়ে হাঁটায়, গিন্নির তেলেবেগুনে, সন্তানের না পাওয়া আব্দারে। হ্যাঁ, আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাই। আর অভ্যস্ত হওয়াদের দেশে দু’চারজন অপুর আত্মহত্যা, এক শওকতের ক্ষণিকের জ্বলে ওঠা, চুল কেটে দেয়ার অপমানে আরেকজনের আত্মহননের চেষ্টা তেমন কিছু ‘মিন’ করে না। আর ‘মিন’ করলেই বা কী, যারা এই আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য দায়ী, যারা শওকতকে বিক্ষুব্ধ করেছে তাদের তো প্রমোট করেছি আমরাই। তারা শিক্ষক হয়েছেন, কীভাবে হয়েছেন, কেন হয়েছেন তা জেনেবুঝেই আমরা তাদের কাছে সন্তানদের পড়তে দিয়েছি। শওকতের ক্ষেত্রেও একই কথা। সেও জেনেশুনেই বিষ করেছে পান। আমরা সবাই জেনেশুনে বিষ করেছি পান। আপনি কাকে দোষ দেবেন। দোষ দিতে হলে সবার আগে দোষ দিতে হয় আমাদের অভ্যস্ততাকে। আমাদের সবকিছুকে মেনে নেয়ার প্রবণতাকে, ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশে যাওয়ার অন্যায় অভ্যাসকে। ফুটনোট : এই লেখা আরো অনেক লম্বা করা যায়। হাজারটা উদাহরণ দেয়া যায় সবক্ষেত্রেই। কিন্তু কথা একটাই আমাদের অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া। মেনে নেয়া। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়