হাসান মোরশেদ : [১] ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের সংশোধন জরুরি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ডিজিটাল ক্রাইম ছাড়া যেন এই আইনে কেউ হয়রানি না হয়। জামিন পাওয়ার অধিকার সংকুচিত করা যাবে না।
[২] ফেসবুকে এবং নানা জায়গায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ হয়েছে। এটা ভালো জনমত গঠনের জন্য। ঝুমন দাস বা কোনো ভিকটিম একা নন, সবাই পাশে আছেন- এই ম্যাসেজের জন্য এসব আনুষ্ঠানিকতা দরকার আছে।
[৩] তবে এসবে জামিন হয় না। জামিন হয় আইনি প্রক্রিয়ায়। ঝুমনের জামিনের এতো দেরি হওয়ার মূল কারণ শুরুতে আইনি প্রক্রিয়ার গলদ। এজন্য একেবারে শুরুতে ভিকটিমকে সঠিক আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়ার মতো অ্যাক্টিভিজম দরকার।
[৪] আইনি প্রক্রিয়ার গলদের কারণে প্রথমবার উচ্চ আদালত জামিন আবেদন ফিরিয়ে দিয়ে শুরু থেকে নতুন আবেদনের নির্দেশ দেন। এই পর্যায় থেকে বিষয়টির সঙ্গে আমি কিছুটা জড়িয়েছিলাম। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন মানুষের নাম উল্লেখ করার জন্য হাত নিশপিশ করছে, তারা চুপচাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন আইনি প্রক্রিয়াতেই এবারের জামিন নিশ্চিত করার জন্য। আমি জানি, নামোল্লেখ তারা কেউ পছন্দ করবেন না। রাষ্ট্র এবং সরকারের পক্ষ থেকে তারা সর্ব্বোচ্চ সহানুভূতিশীল ছিলেন।
[৫] জামিন মানেই মুক্তি নয়। ঝুমনের নিরাপত্তার বিষয় আছে, আর্থিক সামর্থ্যের বিষয় রয়েছে। চার্জশিট হবে, সে যেন সসম্মানে মামলা জয় করে বের হয়ে আসতে পারে সে পর্যন্ত ঝুমনের পাশে সবাইকে থাকতে হবে।
[৬] ঝুমনের মুক্তিতে আর্থিক সহায়তার নামে প্রবাসী হিন্দু কমিউনিটির পাঠানো ভালো অংকের টাকা মেরে দেওয়ার একটা গুজব আছে, এটার সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের যে নেতারা আক্রমণকারী স্বাধীন মেম্বার গংয়ের প্রতি সহানুভূতিশীল তাদেরকেও চিহ্নিত করতে হবে।
[৭] এখন পর্যন্ত একটা সাম্প্রদায়িক হামলারও দৃষ্টান্তমূক শাস্তি হয়নি। নোয়াগাঁওয়ের ঘটনায় অপর মামলা অর্থাৎ হামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি। জনমত এবং আইনি লড়াই দুটাই পাশাপাশি জারি রাখতে হবে। অন্তত একটা ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির উদাহরণ তৈরি করতে হবে। পরবর্তী ঘটনার রক্ষা কবচ হবে সেটি। লেখক ও গবেষক