খালিদ আহমেদ : [২] উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তরের কাগজপত্র ও নথি অনুমোদনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করতে হবে, এটিসহ এ সংক্রান্ত বিধি ও প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ জন্য আদালতের আদেশের বিষয়টি উল্লেখ করে ইউএনওদের প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[৩] এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
[৪] এর আগে উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও দুমকি উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনোহরদী উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খানসহ পাঁচজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রিটটি করেন।
[৫] রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। ইউএনওদের সাচিবিক দায়িত্ব পালনের বিধানসংক্রান্ত উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।
[৬] আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তর/কর্ম উপজেলা পরিষদে হস্তান্তর বিষয়ে ২০১০ সালের ১৭ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ইউএনও বিষয়ে বলা হয়, ইউএনও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগে সহায়তা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। তিনি পরিষদের অর্থ ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের সব প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করবেন। উপজেলা পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন।
[৭] একই বছরের সেপ্টেম্বরে উপজেলা পরিষদের (কার্যক্রম বাস্তবায়ন) বিধিমালায় সংশোধনী আনা হয়। সংশোধিত ১৪(১) উপবিধির ভাষ্য, দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত বিষয়ে সব কাগজপত্র ও নথি, ইউএনওর মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে অনুমোদনের জন্য পেশ করবেন। তবে ওই প্রজ্ঞাপন ও সংশোধিত উপবিধির বাস্তবায়ন হচ্ছে না উল্লেখ করে রিট আবেদনকারীরা সম্পূরক আবেদন করেন, যার ওপর আজ শুনানি হয়।
[৮] আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ও হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
[৯] পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, উপজেলা পরিষদ আইনের মূল চেতনা হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে উপজেলা পরিষদ। প্রশাসন এ কাজে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করতে সহায়তা দেবে। উপজেলা পরিষদ আইন, উপজেলা পরিষদ (কার্যক্রম বাস্তবায়ন) বিধিমামলার (১৪৯১) উপবিধি ও ২০১০ সালের ১৭ জুনের প্রজ্ঞাপনে তা–ই বলা আছে।
[১০] কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অধিকাংশ উপজেলা জনপ্রতিনিধিদের পাশ কাটিয়ে ইউএনও পরিষদের বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যা আইন পরিপন্থী। যে কারণে ওই উপবিধি ও প্রজ্ঞাপনের বাস্তবায়ন চেয়ে সম্পূরক আবেদন করা হলে হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও