শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৮:০৫ রাত
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৮:০৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] সংকট-সম্ভাবনার মিশ্রণে জবির গবেষণা খাত

অপূর্ব চৌধুরী: [২] বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত পরিচয় নির্ধারিত হয় গবেষণার মাধ্যমে।গবেষণা দ্বারাই নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি ও তত্ত্ব উদ্ভাবন করা হয়।তবে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এদিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় দেশের অন্যতম সেরা এই বিদ্যাপীঠের গবেষণা কার্যক্রম স্থবির প্রায়।

[৩] গবেষকদের দাবি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সংকট গবেষণার প্রধান অন্তরায়।গবেষণার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সম্বলিত যেসব ল্যাব প্রয়োজন হয় এখানে সেগুলো নেই।ফলে বেগ পোহাতে হয় তাদের। বিগত বছরগুলোতে বাজেটে নামমাত্র বরাদ্দের ফলেও গবেষণা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে বলেও মত তাদের।

[৪] তবে গত জুনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক যোগদানের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন। সেন্ট্রাল সায়েন্স ল্যাবরেটরি তৈরীর উদ্যোগ, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার গবেষণা খাতে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দেওয়া,গত ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও গবেষণা শিল্প পরিষদ (বিসিএসআইআর) এর সাথে গবেষণা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর সহ আরও কয়েকটি পরিকল্পনার ফলে আবারও গবেষণা ঘিরে আশার আলো জ্বলে উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে।

[৫] গবেষকদের দাবি এসব উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলিক গবেষণার সংস্কৃতি চালু করা গেলে ত্বরান্বিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগিয়ে চলাও একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পাবে আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিং এ।

[৬] বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।২০২০-২১ অর্থবছরে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল ২ লাখ টাকা।

[৭] বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে গবেষণা খাতে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রশাসনের দাবি সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে গবেষণামুখী করতে প্রচেষ্টা চলছে।তবে বিষয়টি কিছুটা সময়সাপেক্ষ।

[৮] জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ও গবেষক মার্জান মারিয়া বলেন, গবেষণার জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এটা প্রশংসনীয় । এই উদ্যোগ আমাদের আরও ভালো কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরতে সাহায্য করবে । কিন্তু আমার মনে হয় পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা পর্যাপ্ত নয়। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব ডিপার্টমেন্টে কম বেশি ভালো গবেষণা হয় সীমিত সুযোগ স্বত্তেও। যদি গবেষণার জন্য বরাদ্দ আরও বাড়ানো যায় এবং সঠিকভাবে ব্যয় হয় তাহলে আমরা আরও এগিয়ে যাব।

[৯] গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ মোছাদ্দির হোসেন বলেন, কিছুদিন পর পর যখন আন্তজার্তিক সংস্থা গুলোর বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ করে তখন সেই তালিকায় আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একদম তলানিতে থাকে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়টি খুব ইতিবাচক।অবকাঠামোগত সমস্যা ও নানা জটিলতায় জবিতে গবেষণা কার্যক্রম জীর্ণ প্রায়। তবে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় অর্থ বৃদ্ধি করার অর্থ সেরা হওয়ার দিকে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।

[১০] রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আমিনুল হক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হলেও এখানে অনেক শিক্ষক ভালো ভালো গবেষণা করছে।এবারের বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক বিষয়।আমাদের পর্যাপ্ত যন্ত্রাদি ও সরঞ্জামাদি নেই।তাই বিসিএসআইআর এর সাথে সম্প্রতি যে চুক্তিটা হলো তার ফলে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সুবিধা পাবে।ফলে গবে ত্বরান্বিত হবে।এছাড়াও এমন চুক্তি অব্যাহত থাকবে।ফলে আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটা এগিয়ে যাবে।

[১১] গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সংশ্লিষ্ট আধুনিক কোন যন্ত্রপাতি নেই। এছাড়াও অনেক সময় ফান্ডের অভাবে ছাত্র শিক্ষকদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এবছর গবেষণায় বাজেট বাড়ানোর ফলে গবেষণা ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় রিসার্চ ল্যাব দরকার হয়।কিন্তু ল্যাব না থাকলে গবেষণা কাজ বন্ধ থাকবে তা হতে পারেনা। তাই যেসব প্রতিষ্ঠানে সুযোগ সুবিধা আছে তাদের সাথে চুক্তি করা হচ্ছে। যেন আমাদের এখানে সুবিধা না থাকলেও সেসব জায়গায় গিয়ে আমাদের শিক্ষক ছাত্ররা তাদের গবেষণা কাজটি করতে পারে।

[১২] সার্বিক বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, গবেষণা ক্ষেত্রে সবাইকে সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছি।এতে করে অনেকেই গবেষণায় উদ্ধুদ্ধ হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ত্বরান্বিত হবে।তখনই এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হবে। সেটিই আমার প্রত্যাশা।

[১৩] তিনি আরও বলেন, আমরা খুব শীঘ্রই বুয়েট,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সাথেও গবেষণা বিষয়ক চুক্তি করতে চাচ্ছি। সেন্ট্রাল সায়েন্স ল্যাবরেটরি করার জন্য কমিটি করে দিয়েছি।তারা ও কাজ করছে।আশা করি খুব শীঘ্রই তারা একটি প্রস্তাব তৈরী করতে পারবে। সব কিছুই আমাদের পরিকল্পনায় আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়