শামীম আহমেদ: ২১ অগাস্ট বাংলাদেশিদের জীবনে কী দুর্যোগ আনতে পারত ভাবলে আমি আজও আতংকিত বোধ করি। এই যে আফগানিস্তান নিয়ে এতো আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, ঘাতক তারেক জিয়া ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা যদি ২১ অগাস্টের পরিকল্পনায় সফল হতো, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা আজকে আফগানিস্তানের চাইতেও খারাপ হতো। হয়তো সেন্ট মার্টিনে ঘাঁটি গেড়ে আজকে আমেরিকা আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশকেও একটা পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করতো। ইতিহাস যতো পুরনো হয়, ততো পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার অনেক গোপন তথ্যাদি যেমন এখনও বেরিয়ে আসছে, আমার ধারণা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার অনেক তথ্যও সামনের দিনগুলিতে বেরিয়ে আসতে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী নূর শুধু নয়, ডালিমসহ অন্যান্যদের এই ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে আমি মনে করি। বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আনা এবং সেগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিবহন করা একটি অনেক বড় ষড়যন্ত্রের অংশ ছাড়া কিছু হতে পারে না।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সময়ও সেনাবাহিনীর এসব বহিষ্কৃত কর্মকর্তারা বাইরে থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলো। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান তাদেরকে পুনর্বাসিত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নানা দেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করে। ওই সময়ে তাদের তাদের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গঠন করে যা পরবর্তীতে নানা সময় কাজে লাগিয়েছে এমন তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া যায়। ২০০৮ সালের ২১ আগস্টের সময়ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী খুনিরা তাদের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে আভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করেছে এমন তথ্য হয়ত সামনের দিনগুলিতে উদঘাটন হবে। ১৯৭৫ সালের পর ২০০৪ সাল এই ২৯ বছর সময় নিয়ে বাংলাদেশ বিরোধীরা স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই জন মানুষ- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় সমর্থ হলেও শেখ হাসিনাকে হত্যায় ব্যর্থ হয় বিধায় আমরা হয়তো ২০০৪ সালের ২১ আগস্টকে অনেক বড় হামলা হিসেবে দেখি না। কিন্তু ওইদিন যদি শেখ হাসিনার কিছু হয়ে যেতো, তাহলে সেটি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্রাজেডির চাইতে কোনো অংশে কম বিপর্যয় হতো না বাংলাদেশের জন্য। লেখক: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ