শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১০ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৮ দুপুর
আপডেট : ১০ আগস্ট, ২০২১, ১২:৫৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমজাদ আকাশ: শিল্পী এসএম সুলতান, আমাদের লাল মিয়া

আমজাদ আকাশ: নাম লাল মিয়া। একটু বাউÐুলে। বাবা রাজমিস্ত্রি। অভাবের সংসার। কিন্তু লাল মিয়ার মনে নানা রকম নকশা খেলা করে। কাগজে সেসব এঁকে ফেলেন দারুণ দক্ষতায়। গাছ-পাখি, লতা-পাতা থেকে শুরু করে মানুষের ছবি আঁকতে পারেন অনায়াসে। নড়াইলের মাসিমদিয়া এলাকায় শিল্পী হিসেবে ছেলেটির নাম মুখে মুখে। নামটি আরও পাকাপোক্ত হলো যখন ডা. শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী স্কুল পরিদর্শনে এলেন। লাল মিয়া তাঁর ছবি এঁকে উপহার দিলেন। শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী তো মুগ্ধ। লাল মিয়ার গুনে আরও মুগ্ধ হয়েছিলেন জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়।

ছেলেটির মনে শিল্পী হবার আকাক্সক্ষা তীব্র হয়ে উঠলো। শিল্পী তাঁকে হতেই হবে। ছবি আঁকা শিখতে হবে আরো ভালো করে। প্রয়োজন ভালো কোনো শিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কলকাতা আর্ট কলেজে যদি কোনোভাবে ভর্তি হওয়া যায়। জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। ১৯৪১ সালে ভর্তি হন কলাকাতা আর্ট কলেজে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন শেখ মোহাম্মদ সুলতান। আমরা তাঁকে শিল্পী এস.এম সুলতান হিসেবে চিনি। মন থেকে যিনি খাঁটি শিল্পী তার কী আর কলেজের বাঁধা-ধরা নিয়ম ভালো লাগে ছকবাঁধা ফ্রেমে ছবি আঁকা তার পোষায় না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অসমাপ্ত রেখে কলকাতা আর্ট কলেজের সেসময়ের তাক লাগানো ছাত্র সুলতান কলেজ ছাড়লেন। উদ্দেশ্য পুরো ভারতবর্ষের জীবনকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা আর ক্যানভাসে ধরে রাখা। তাই তিনি স্বজ্ঞানে বেছে নিলেন ব্যোহেমিয়ান জীবন। মানুষকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার জীবন।

ভারতবর্ষ দেখলেন, আঁকলেন। রঙ ও রেখায় ফুটিয়ে তুললেন মানুষ ও প্রকৃতির জীবন। ১৯৪৬ সালে সিমলায় প্রথম একক প্রদর্শনী করলেন। উপমহাদেশে চিত্রশিল্পী হিসেবে সেসময় তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়লো। ভারতবর্ষ ছেড়ে পারি জমালেন ইউরোপ হয়ে আমেরিকায়। প্রদর্শনী করলেন বিশ্ব বিখ্যাত দুই কিংবদন্তি শিল্পী পিকাসো ও সালভাদর দা’লির সাথে।

বিশ্ব ভ্রমণ শেষে তিনি যেন মায়ের ডাক শুনতে পেলেন। ফিরে এলেন নিজভ‚মে, নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে। নিজের মানুষদের ছবি আঁকলেন। চাষীদের জীবন আঁকলেন, স্বপ্ন আকঁলেন। মাতৃভ‚মির কৃষকদের জীবন তুলে ধরলেন বিশ্বের দরবারে। নড়াইলে তিনি নন্দনকানন নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও শিশুদের জন্য তিনি শিশুস্বর্গ ও চারুপীঠ গড়ে তোলেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর তিনি মারা যান। ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট জন্ম নেওয়া বিশ্ববিখ্যাত এই শিল্পীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

লেখক : চিত্রশিল্পী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়