শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২১, ০৩:২০ রাত
আপডেট : ৩০ জুলাই, ২০২১, ০৩:২০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ: অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী, বিএসএমএমইউ’র প্রথম উপাচার্য, রোগীর প্রতি যত্নশীল ও দরদী মানুষ ছিলেন তিনি

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ: ২৯ জুলাই ছিলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। অধ্যাপক এম এ কাদেরীর পুরো নাম অধ্যাপক ডা. মাজহার আলী কাদেরী, কিন্তু তিনি অধ্যাপক এম এ কাদেরী নামেই সর্বজন পরিচিত। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তৎকালীন আইপিজিএমআর এ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে আইপিজিএমআরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হলে তিনি প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামে। ১৯৪১ সালের ১ অক্টোবর চট্রগ্রাম মহানগরীর নবাব সিরাজদৌল্লা রোডস্থ পৈত্রিক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম শহরেই তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। ১৯৫৭ সালে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫৯ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে আইএসসি পাস করার পর চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে স্বর্ণপদকসহ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তা স্বত্ত্বেও সরকার বিরোধী ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে আইয়ুব-মোনায়েম সরকার তাকে স্কলারশিপ থেকে বঞ্চিত করেন এবং ৪ বছরের জন্য উচ্চশিক্ষায় বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে দেয় । ১৯৬৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৬৮ সালের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাউস সার্জন, সিনিয়র হাউস সার্জন ও ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চতর শিক্ষার জন্য ডা. এম এ কাদেরী বিলাত যান এবং গজঈচ ডিগ্রি অর্জন করেন।

অধ্যাপক এম এ কাদেরী ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পাবনা-৫ (সদর উপজেলা) এর সাংসদ রফিকুল ইসলাম বকুল মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তী সময়ে উক্ত শূন্য আসনের উপনির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। আমি অত্যান্ত সৌভাগ্যবান যে, উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর সময় আমি ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) (ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। তার মতো একজন ব্যক্তির সান্নিধ্যে কাজ করে আমি কর্মজীবনে অনেক কিছু শিখেছি। আজ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য। তাই আমি এই দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরী স্যারকে এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

তিনি ছিলেন অত্যন্ত গুণী শিক্ষক, চিকিৎসক, রোগীর প্রতি অত্যন্ত দরদী মনের অধিকারী এবং দক্ষ প্রশাসক। শিক্ষক হিসেবে তিনি তার ছাত্র ছাত্রীদের অন্তর দিয়ে ভালবাসতেন, স্নেহ করতেন কিন্তু শিক্ষার মান ও নীতি আদর্শের কাছে কোনদিন আপোস করেননি। তিনি রোগীদের প্রতি অত্যন্ত দরদী ও যত্মবান ছিলেন। রাতেও তিনি হাসপাতালে নিয়মিত রাউন্ড দিতেন। একজন ভালো শিক্ষকের যতো গুণ থাকা প্রয়োজন অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর মাঝে সবগুলো ছিলো। যার শিক্ষা দানের পদ্ধতি ছিলো অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে বাস্তবে রূপ দিতে অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর অবদান অসামান্য। মানবিক গুনাবলীতেও তিনি ছিলেন অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি শুধু কথায় নয় বাস্তবেই তিনি তার গুণগুলো ধারণ করতেন।

বহুগুণের অধিকারী অধ্যাপক এম এ কাদেরীর জীবনাদর্শ আগামী দিনের পথ চলতে সকলকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রেসিডেন্সি কোর্স চালু করেন, এম ডি ও ডিএমডি কোর্স চালুর প্রচেষ্টা করেন এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সফল যাত্রায় অধ্যাপক ডা. এম এ কাদেরীর অবদান অপরিসীম। তিনি দিন রাত পরিশ্রম করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে গেছেন। তার নীতি এবং আদর্শকে অনুসরণ করে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাব, এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

লেখক : উপাচার্য, বিএসএমএমইউ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়