নাঈমুল ইসলাম খান : ১. নিকুঞ্জে ৩ কাঠার ছোট্ট জমি, আমারটি কর্নার প্লট এবং এই জমিটুকুর বাজার মূল্য সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
২. সুতরাং কেবল এই জমি সূত্রে আমার অন্তত ৪.৫ কোটি টাকার সক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে।
৩. এই জমি রাজউকের কাছ থেকে পেয়েছি মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকায়। এই টাকাও পরিশোধ করেছি কয়েকটি সহজ কিস্তিতে।
৪. ১৯৯২ সালে দৈনিক ভোরের কাগজে আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন রিপোর্টার আল মামুনের পীড়াপিড়িতে এ জমির জন্য আমি রাজউকে আবেদন করি। আল মামুনের এক রকম জোরাজোরিতেই তখন অনাগ্রহী আমি আবেদন করতে ‘বাধ্য হই’।
৫. সেদিন আমাকে বাধ্য করার জন্য আল মামুনের কাছে আমি বাধিত।
৬. জমির বরাদ্দ পাই ১৯৯৮ সালে বিনা তদবিরে, বিনা ঘুষে। জমি লিজের দলিল সম্পাদিত হয় ২০০২ সালে এবং তারও ১৯ বছর পর ২০২১ এর জুন মাসের ২২ তারিখে একটি অসমাপ্ত বাড়িতে আমাদের গৃহ প্রবেশ হয়।
৭. ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে কত লাখ মানুষ এভাবে ভাগ্যবান হয়েছে? নিতান্তই মুষ্টিমেয়। আমি সেই মুষ্টিমেয়র একজন ‘ভাগ্যবান’। আল্লাহ্র কাছে শোকরিয়া। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছেও অশেষ কৃতজ্ঞতা।
৮. রাষ্ট্র তার পছন্দের ব্যক্তিদের এভাবে পেট্রোনাইজ করবে, সামান্য টাকার বিনিময়ে বরাদ্দপত্র দিয়ে রাতারাতি কোটিপতি বানিয়ে দেবে, অনেক গরীব গৃহহীন মানুষের এই দেশে, বেআইনী না হলেও, এই বরাদ্দের প্রথা, এই বড়লোক বানানোর পদ্ধতি কতটা সমর্থন যোগ্য?
৯. আমার একটি ছোট্ট সুন্দর বাড়ি হয়েছে, এরকম একটি স্থায়ী নিজস্ব ঠিকানা আমার প্রয়োজন ছিলো। অনেক বইপত্র, দালিলিক কাগজ, নানান সংগ্রহ ভাড়া বাড়িতে গুছিয়ে রাখার স্থানাভাব হতো। সেই সমস্যার সমাধান পেয়েছি। এজন্য আলহামদুলিল্লাহ।
১০. কিন্তু এ নৈতিকতার প্রশ্নটি মনের মধ্যে প্রায়ই উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছে।
১১. আমাদের দেশে কবে বৈষম্য দূর হবে, দারিদ্র্য দূর হবে, যখন মনের মধ্যে নৈতিক অশান্তিও আমাদের দূর হবে?