বিপ্লব বিশ্বাস: [২] কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, ধনাঢ্যের ছত্রছায়ায় বছরের বছর চালিয়ে যাচ্ছিল মাদক ব্যবসা। নিজে সরকার দলীয় ইউনিয়ন পর্যায় ও পৌর নেতা হওয়া, এতোদিন অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন।
[৩] অবশেষে র্যাব-৮ এর হাতে গ্রেপ্তারের পর এই মাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মাসুম খান রাজ দিয়েছেন ভয়াবহ তথ্য । প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে রাজ র্যাবকে জানিয়েছেন, চার গডফাদারের নাম। যারা এলাকাভিত্তিক রাজনৈতিক নেতাও ধনাঢ্য। মূলত রাজাধানীতে বেশ কয়েকজন মাদক গডফাদারের সাথে তার নৈমিত্তিক যোগাযোগের তথ্য। মূল্যবান এই ক্রিস্টাল মেথ আইস,র্যাব উদ্ধার করার পর পিরোজপুর জেলা শহরের সর্বত্রই বিম্ময় প্রকাশ করেন।
[৪] র্যাব-৮ ও সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক জিঞ্জাসাবাদে অনেক তথ্যই দিয়েছে। রাজের সহযোগীতা এবং ব্যবসায়ী পার্টনারসহ কতিপয় বেশ কয়েকজন ব্যক্তির নাম জানিয়েছে রাজ। তবে তদন্তের ম্বার্থে এখনি নাম বলেনি তিনি। র্যাব জানায়, সমাজে এমনই কিছু ব্যক্তি এসব মাদক কারবারীদের দেখবাল সার্বিক সহযোগীতা করে থাকে। তাদের ব্যাপারে আরো তথ্য সংগ্রহ চলছে।
[৫] মাদক ব্যবসায়ী রাজ পিরোজপুর জেলা সদরের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের ওধনকাঠী গ্রামের মৃত মতিউর রহমান খানের ছেলে।
রবিবার (১৮ জুলাই) র্যাব-৮ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরে ওই দিন দুপুরে তাকে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় বরিশাল র্যাব-৮ এর ডিএডি মোহাম্মদ আল মামুন শিকদার বাদী হয়ে পিরোজপুর সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
[৫] উল্লেখ্য গত শনিবার (১৭ জুলাই) রাত পৌনে ৯টার দিকে জেলার সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের ওধনকাঠী গ্রামের আটককৃত মাসুম খানের বাড়ির সামনের ইটের রাস্তার উপর বসে মাদক জাতীয় দ্রব্য বেচা-কেনা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা সেখানে অভিযান চালান। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে থাকা অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলেও মাসুম খান দৌড়ে পালানোর সময় আটক হয়। এ সময় তার কাছে থাকা একশত গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস নামের দামীয় মাদক উদ্ধার করা হয়।
[৬] সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম শিকদার মন্টু গ্রেফতারকৃত মোহাম্মদ মাসুম খান রাজ ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নিশ্চিত করেছেন। তবে ওই কমিটি এখনো অনুমোদিত হয় নি।
[৬] র্যাব সূত্র আরও জানায়, মূল্যবান ক্রিস্টাল মেথ আইস মাদক একটি ভয়াবহ ক্ষতিকর মাদক। যা দেশের প্রচালিত অন্যান্য সকল মাদকের থেকে ক্ষতিকর ও ভয়াবহ।
[৭] জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) একাধীক সূত্র জানান, আটককৃত মোঃ মাসুম খান রাজ একজন তালিকা ভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। এর আগে মাদকসহ তার ভাই মামুন ও তার স্ত্রীসহ গ্রেফতার করা হয়েছিলো।
[৮] পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ.জ.ম মাসুদুজ্জামান জানান, ওই মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাকে থানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ মাদক অত্যন্ত দামি। যার একশ গ্রামের দাম ১৫ লক্ষ টাকা। জেলা শহরে এই মাদক ঢুকে পড়েছে সত্যিই দুঃখজনক।