শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০৯ জুলাই, ২০২১, ০৪:২০ দুপুর
আপডেট : ০৯ জুলাই, ২০২১, ০৪:২৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

করোনা: খুলনায় বাবার জানাজা পড়ে এসে দেখলেন মা মারা গেছেন কয়েক মিনিট আগেই

সোলাইমান হোসাইন মিন্টু: করোনা হাসপাতালে আমার অন্তরকে কাঁদানো একটা হৃদয় বিদারক কাহিনী বলি। আমার মায়ের পাশের বেডে খুলনা সদরের একটা ছেলে তার মাকে ভর্তি করিয়েছে গত পরশু। তার মায়ের শ্বাসকষ্ট তীব্র ছিল। অক্সিজেন লেভেল ৭০ এর কাছাকাছি।

গতকাল (০৭ জুলাই) তার বাবারও তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বাড়িতে। সে ছিল তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। তাই হসপিটলে মুমূর্ষু মাকে একা রেখেই বাধ্য হয়ে ছুটে যেতে হয়েছে বাসায় তার বাবার কাছে। সেখানে যাওয়ার পর তার মা কয়েকবার কষ্টে অক্সিজেন মুখ থেকে টেনে খুলে ফেলেছিল। তখন আমার ছোট বোনটি তার মুখে আবার লাগিয়ে দেয়।

বাড়িতেই একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে বাবাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে আবার ছুটে আসে মায়ের কাছে। কি অসহায় মুহূর্ত!! রাত ৩টার দিকে তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে ছুটে যায় বাবার লাশের কাছে। তারপরে আজ সকালে আবার আসে মায়ের কাছে।
আমি দেখলাম, ছেলেটি তার মায়ের বেডের উপর মাথা দিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। আমি এগিয়ে গিয়ে উনার গায়ে হাত দিয়ে ডেকে একটু সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। লাভ হলো না। হওয়ার কথাও না।

এরপর যেটা হলো সেটা আরো হৃদয় বিদারক। উনি আমাকে বললেন ভাই, আমার মায়ের পাশে আপনি যদি একটু বসতেন তাহলে আমি একটু আমার বাবার জানাজায় যেতাম। সত্যি বলছি, সহ্য করার মতো ছিল না সেই মুহূর্তটা। যাহোক, আমি উনাকে বললাম ভাই আপনি যান, আমি ও আমার ছোট বোন দুজনেই আপনার মাকে দেখে রাখবো ইনশাল্লাহ। উনি আমাকে বললেন, ভাই আপনি আপনার বোনও অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন সেটা আমি জানি। তাই আপনিই যদি একটু আসতেন। আমি বললাম ঠিক আছে ভাই আমি আসবো ইনশাল্লাহ।

উনি আমাকে বলেন, জোহরবাদ বাবার জানাজা। আমি তখন যাবো। আপনি ১টার দিকে আসেন। আমি সাড়ে ১২টার দিকে গেলাম। যেয়ে দেখলাম সেখানে একটা ১৩ থেকে ১৪ বছরের ছোট্ট ছেলে বসা। আমার ছোট বোনের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম ছেলেটা কে? সে জানাল, ওই ছেলেটিকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে বাবার পাশে রেখেছে। কী হৃদয়বিদারক!!!

কিন্তু সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো এর পরে। ওই ভাইটা বাবার জানাজা শেষ করে হাসপাতালে এসে মাকে মৃতু দেখলো। উনি আসার ৫-৭ মিনিট পূর্বে তার মাও না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তারপরে ছেলেটির আহাজারি প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।

লেখক: শিক্ষক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
গোপালগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক, সিসিএস স্বেচ্ছাসেবী।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়