শিরোনাম
◈ নাটোরের ১৩ টন গুলির খোসা পাওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি! ◈ বাংলাদেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিকে আইএমএফের প্রশংসা ◈ ‘সব সূচকে নাজুক অবস্থায় দেশের অর্থনীতি’ ◈ বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় এডিবি : কান্ট্রি ডিরেক্টর ◈ ক্রিকেটারদের শ্লীলতাহানি দুঃখজনক, ভারতের ভাবমূর্তির জন্য লজ্জার: বি‌সিসিআই ◈ চট্টগ্রাম বন্দরে ট্যারিফ বৃদ্ধি ও বিদেশি অপারেটর নিয়োগে সমালোচনার ঝড় ◈ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথমবারের মতো দেশে এলো আমদানি করা প্রায় ৫৭ হাজার টন গম ◈ ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়, ব্যর্থ হলে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে: প্রধান বিচারপতি ◈ শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে হবে: তারেক রহমান ◈ দুই দশক পর ঢাকায় বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক, নতুন সম্ভাবনায় আশাবাদ দুই দেশ

প্রকাশিত : ০৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৬ রাত
আপডেট : ০৯ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শওগাত আলী সাগর: সারাদেশে যতোটা সম্ভব একডোজ করে টিকা হোক আগে, পর্যাপ্ত টিকা হাতে এলে দ্বিতীয় ডোজ শুরু করা যাবে

শওগাত আলী সাগর: [১] করোনার টিকা নিয়ে ভীষণ সংকটে পরেছিলো কানাডা। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আক্ষরিক অর্থেই ভিক্ষায় নেমেছিলেন টিকার জন্য। ধনীদেশগুলোর মধ্যে কানাডাই একমাত্র দেশ যারা স্বল্পোন্নত দেশে সরবরাহের জন্য সংরক্ষিত কোভ্যাক্সের মজুদ থেকে অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা এনেছিলো। সেই কানাডা শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন সবকিঝু খুলে দিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা শুরুর প্রক্রিয়া শুরু করেছে টিকার ওপর নির্ভর করেই।

[২] টিকার সংকট যখন তীব্র, চারদিকে টিকা নিয়ে হতাশা যখন চরমে, জাস্টিন ট্রুডোর ক্ষমতা যায় যায় অবস্থা- কানাডার চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা সরকারের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেননি। তারা তাদের কাজ করেছেন। তারা গবেষণা করে দেখেছেন, দুই ডোজের মাঝখানের গ্যাপটা কতোটা বাড়ানো যায়। সেইভাবেই তারা টিকার পরিকল্পনা করেছে। অগ্রাধিকার তালিকা করে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে প্রথম টিকা দিয়েছে। টিকার সরবরাহ বাড়তে শুরু করলে তারা সাধারণ নাগরিকদের এক ডোজ করে টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজ যতোটা সম্ভব পিছিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ টিকা যে দিতে হয়, সেই কথাটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলো যেন কানাডা। সরবরাহ যখন বেড়েছে তখন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। কানাডার কৌশলটা যে কাজে দিয়েছে- তার প্রমাণও পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়। এক ডোজ করে টিকা সংক্রমণ, আইসিইউ, মৃত্যু সবকিছুকেই যথেষ্ট পরিমাণে ঠেকিয়েছে।

[৩] বাংলাদেশ এই কৌশলটা অনুসরণ করতে পারে। অগ্রাধিকার তালিকা করে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে এক ডোজ করে টিকা দিয়ে সেটি সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। সারা দেশে যতোটা সম্ভব এক ডোজ করে টিকা হোক আগে। একইসঙ্গে চলুক টিকা সংগ্রহের চেষ্টা। পর্যাপ্ত টিকা হাতে এলে দ্বিতীয় ডোজ শুরু হবে। তার আগে অবশ্যই বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে- বাংলাদেশের জন্য একই কৌশল কার্যকর কিনা- সেটি বিবেচনায় নিতে হবে।

[৪] সরকারের উচিত করোনার টিকার জন্য ভিক্ষায় নেমে যাওয়া, যেমনটা নেমে পরেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ততোক্ষণ লকডাউন চলতে থাকে, মাস্ক পরা চলতে থাক, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ চলতে থাক।

২. কোভিড ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়, সেটা ঠিক মতো না বুঝলে আপনি এর বিস্তার রোধ করতে পারবেন না। আপনার মগজে এই ভাইরাস সম্পর্কিত বিজ্ঞানসম্মত তথ্যাদি না ঢুকলে, শরীরে ভাইরাস ঢোকা নিয়ে আপনার মধ্যে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে না। আপনি তখন ভাইরাসের চেয়েও তার আশপাশের বিষয় নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হবেন। ভাইরাস আপনার রাজনীতি বুঝে না, আপনার নেতাকে চিনে না। আপনার নেতার ক্ষমতা নিয়েও করোনা ভাইরাসের কোনো বিকার নেই। সে তার কাজ করে যায়। এক বছর ধরে সে আপনার/আপনাদের সব বিশ্বাসকে ভুল প্রমাণিত করেছে, সে তার কাজ করেছে। আপনিই শুধু আপনার কাজটি করেননি।

কোভিড নিয়ে সবার কথা বলার দরকার নেই। কিন্তু সবার কাজ করার দরকার আছে। বিশেষ করে কোভিড সম্পর্কিত বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যাদি যাদের মগজে ঢুকেনি, তারা কথা না বললে উপকার হয়। কোভিডের মতো জাতীয় দুর্যোগে সবকিছুই খবর হয় না,সবকিছুকেই খবর করতে হয় না। এ ধরনের দুর্যোগে ভালো মিডিয়ার লক্ষ্য থাকে মানুষ, মানুষকে বাঁচানো, ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচানো। সোজা কথায় বললে, ভাইরাস তাড়ানো। ভাইরাস তাড়ানো গেলে মানুষ বাঁচবে, ভাইরাস তাড়ানো না গেলে মানুষকে খাবার দিয়েও বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। এ ধরনের দুর্যোগে মানুষের নিজেদের ভূমিকা রাখতে হয়, ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। নিজেকে নিজে প্রশ্ন করতে হয়, আমি কি আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছি?
লেখক : কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়