জাফর ওয়াজেদ: জিয়া কেমন যোদ্ধা ছিলেন তা জানেন তার সহযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে কালুরঘাটে পাকিদের সঙ্গে সম্মুখ লড়াইয়ে পিছু হটেন। সহযোদ্ধা তার শমসের মবিন চৌধুরী সারেন্ডার করেণ পাকিদের কাছে কালুরঘাট সেতুর নিচে। পিছু হটে জিয়া রামগড়ের পথে সদলবলে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে পাটিয়াতে পেয়ে যান চাকসুর জিএস রব, জহুর আহমদ চৌধুরীর বড়পুত্র সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরীসহ ৭ জনকে। তারা বান্দরবন হতে ফিরছিলেন। গিয়েছিলেন সেখানকার এডিসি কথা সাহিত্যিক আব্দুশ শাকুরের কাছে। তাদের সঙ্গে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার অনুরোধ জানাতে। তারা সরকারি ভাণ্ডারে থাকা অস্ত্র সাহায্য চায় তেমন অস্ত্র না থাকায় ফিরে যান। জিয়া তাদের তার বহরে নিয়ে নেন রাস্তাঘাট চেনানোর জন্য। রামগড় যাওয়ার পথ জিয়ার জানা ছিলো না। রাঙ্গুনিয়া বিআইটির অনেক আগে একটি বাজারে তারা অবস্থান নেন। চারটি জিপে ভর্তি সেনা। আর জিএস রবের জিপে ১০ জনের মতো। তাদের কাছে কাটা রাইফেল শুধু। মার্চ মাসে তারা এই অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়। জিয়া তাদের সামনে রেকি করার জন্য পাঠায়। অথচ তারা এসব বিষয়ে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ।
জিয়া তাদের সঙ্গে মাত্র একজন সিপাহি দেয়, সেনা অফিসার সঙ্গে থাকার পরও। তারা বাংলাদেশের পতাকাসহ জিপ নিয়ে ইনজিনিয়ারিং কলেজের মোড়ে আসতেই শুরু হয় পাকি সেনাদের গুলিবর্ষণ। তারা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সামনে এগোতে থাকেন। গুলিতে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান রব, খালেদসহ তিন জন। বাকিরা ক্রলিং করে পালাতে গিয়ে আহত হন। পরে আরও একজন মারা যান। জিয়া গুলির শব্দ শুনে পিছু হটে যান। প্রতিরোধ গড়েননি। তিনজন আহত অবস্থায় বেঁচে যান। ১৯৯০ সালে ঘটনার ওপর প্রতিবেদন ছেপেছিলাম সংবাদে। খালেদের মরদেহ ২০১৩ সালে রাঙ্গুনিয়া হতে তুলে এনে চাটগাঁতে দাফন করা হয়। ঘটনা নিয়ে কবি বিশ্বজিত চৌধুরী উপন্যাস লিখবেন বলে কথা দিয়েছিলেন মধ্যরাতে ১৯৯০ সালে। আজও লেখা হয়নি তার। লেখক : মহাপরিচালক, পিআইবি। ফেসবুক থেকে