সোমবার গভীর রাতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির জরুরী সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। তবে লকডাউন চলাকালে সরবরাহ থাকবে জরুরী সেবা পণ্য। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাবেনা। মাস্ক পরিধান বাধ্যতামুলক, স্বেচ্ছাসেবকরা জরুরী পণ্য সরবরাহ করবেন। সূত্র: ডিবিসি
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক মো:শাহরিয়াজ। ভার্চুয়াল এই সভায় স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন সহ প্রশাসনের কর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সুধিসমাজের প্রতিনিধিসহ অনেকেই যুক্ত ছিলেন। সভা শেষে কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়।
সোমবার নাটোরে একদিনে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে। নাটোরে করোনা আক্রান্ত সর্বচ্চ ৬৭.৩০ শতাংশ। সচেতন নাগরিকদের ভিতরে প্রশ্ন জাগে তাহলে লকডাউন কি আসছে? এমন আশঙ্কা ও চাপা জল্পনা-কল্পনা চলেছে সারাদিন শহর জুড়ে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এছাড়া রোববার এই হার ছিল ৫১ শতাংশ। এ অবস্থায় জেলায় কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার পরিধি বাড়াতে শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বরে ভ্রাম্যমাণ বুথ উদ্বোধন করা হয়। যেখানে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ১১১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তাহলে সোমবার মোট শনাক্ত ৫০ জন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নাটোরে গত ১১ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহে রোগী শনাক্ত হয় ১৪ জন। পরের সপ্তাহে, অর্থাৎ ১৭ থেকে ২৩শে মে পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয় ৪৯ জন। এছাড়া ২৪ থেকে ৩১শে মে পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৩০ জন।
আর গত সপ্তাহের করোনার সংক্রমণ ছিল ৪ঠা জুন ১২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৩৭ জন, যার হার ২৯ দশমিক ৬, ৫ই জুন ৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৪ জন, যার হার ৪৪ দশমিক ৪৪, ৬ই জুন ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ২১ জন, যার হার ৫১ দশমিক ২১ ও সর্বশেষ সোমবার ৭ই জুন ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
যা ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ হিসাবে নাটোরে গত সাতদিনে করোনা সংক্রমণের গড় হার ছিল ৪৩ দশমিক ৫৮ ভাগ। তবে সোমবার শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বরে ভ্রাম্যমাণ বুথ উদ্বোধন করা হলে যেখানে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ১১১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৬ জনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তাহলে সোমবার মোট শনাক্ত ৫০ জন।
নাটোর জেলায় মোট করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৯৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫০১ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের।
সোমবার বিকেলে পর্যন্ত আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে সদর হাসপাতালে ৩১ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ৩৯ জন এবং হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৩৪৫ জন। সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে শনাক্ত রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা চলছে।