সুজন কৈরী: [২] হত্যাকাণ্ডের ৬ মাস পর লাশ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা আবুল কালাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যতম আসামি আকবরকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর। গত ২৮ মে রাজধানীর রুপনগরের দুয়ারীপাড়া এলাকা থেকে আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের লক্ষ্যে ৭ দিনের পুলিশি রিমান্ডের আবেদন করেছে পিবিআই।
[৩] রোববার পিবিআই, ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রুপনগরের দুয়ারীপাড়া এলাকার গ্রিল ওয়ার্কসপ কর্মচারী আবুল কালাম (২৩) ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন। ওই ঘটনায় অপহরণ ও খুনের অভিযোগে ভিকটিমের ভাই আবুল বাশার মিজি (৩৬) রুপনগর থানায় মামলা করেন। ঘটনাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করে মামলার এজাহারনামীয় দুই আসামি শামীম মৃধা এবং স্বাধীন মীরকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের ৬ মাস পর ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর শামীমের ভাড়া বাসার মেঝের মাটি খুঁড়ে আবুল কালামের মৃতদেহের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে আবুল কালামের মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তার স্বাধীন মীর আদালতে আবুল কালাম হত্যায় নিজেকে জড়িয়ে এবং আসামি শামীম, আকবর ও সুমনের ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশ তদন্তে প্রাপ্ত আসামি আকবর ও সুমনের প্রকৃত নাম ঠিকানা সনাক্ত করতে না পেরে গ্রেপ্তার শামীম ও স্বাধীন মীরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
[৪] বাদীর না-রাজী আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
[৫] আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর পিবিআইর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিক-নির্দেশনায় তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রে (উত্তর)। এরই প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম দুয়ারীপাড়া এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামি আকবরকে গ্রেপ্তার করে।
[৬] গ্রেপ্তার আকবর জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে পিবিআই জানতে পেরেছে, নিহত আবুল কালামের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শামীমের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। শামীম ও তার বন্ধু স্বাধীন, আকবর ও সুমন ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আবুল কালামকে কৌশলে বাসা থেকে অপহরণ করে রাজধানীর মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরের পূর্ব পাশে পানির ডোবার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ৮টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঘাসের নীচে লুকিয়ে রাখে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে পরদিন রাতের বেলা তারা ঘাসের নীচ থেকে আবুল কালামের মরদেহ বস্তায় ভরে দুয়ারীপাড়ায় শামীমের ভাড়া বাসার মেঝেতে গর্ত করে পুতে রেখে মাটি দিয়ে আবারও গর্ত ভরাট করে পালিয়ে যায়।