কিরিরি রয়, ফেসবুক থেকে, কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী ‘বিদ্রোহী’ কবিতার এই লাইন আমরা কমবেশি সকলে জানি। কিন্তু কবি কেন পরশুরামের কঠোর কুঠার হতে চান? কে এই পরশুরাম? আর তার কুঠারের এমন কি বিশেষত্ব? পৃথিবীতে শান্তি আনার জন্য কি করেছিলেন তিনি? পৌরাণিক চরিত্র এই পরশুরামের কাহিনী একটু ফিরে দেখা যাক।
বিষ্ণুর দশাবতারের তালিকায় ষষ্ঠ নামটি পরশুরামের। এমনই একটি চরিত্র, যিনি রামায়ণ এবং মহাভারত— দুই মহাকাব্যেই উপস্থিত। তার বাইরে বিবিধ পুরাণেও পরশুরামকে খুঁজে পাওয়া যায়। কিংবদন্তি ও পুরাণ মতে, পরশুরামের জন্ম চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে।
পরশুরামের পিতা জমদগ্নি ও মাতা রেণুকা। জমদগ্নি ব্রাহ্মণ হলেও রেণুকা ছিলেন ক্ষত্রিয়কন্যা। সে কারণে পরশুরাম জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণ হলেও প্রবল ক্ষাত্রতেজসম্পন্ন ছিলেন।
তাঁর সঙ্গে সুরভি নামের এক গাভীর অধিকার নিয়ে কার্তবীর্যার্জুন নামে এক মহাপরাক্রমশালী ক্ষত্রিয় রাজার তীব্র দ্বন্দ্ব হয়। অবশ্য এই সুরভি গাভীর বিশেষত্ব কি ছিল বা কেন একটি গাভী এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল অথবা এর প্রতিকী ব্যাখ্যাই বা কী তা অনুসন্ধান যোগ্য। যা হোক আমরা এগিয়ে যাই আমাদের মূল প্রশ্নের উত্তরে।
যুদ্ধে পরশুরাম কার্তবীর্যার্জুনকে পরাজিত করেন এবং তাঁকে হত্যা করেন। কিন্তু রাজন্য হত্যার পাপ তাঁর উপরে এসে পড়ে।
পিতা জমদগ্নির নির্দেশে তিনি পাপস্খালনের জন্য তীর্থভ্রমণে বের হন। ও দিকে কার্তবীর্যার্জুনের হত্যার প্রতিশোধ নিতে ক্ষত্রিয় রাজারা একত্র হন এবং পরশুরামের অনুপস্থিতিতে জমদগ্নিকে হত্যা করেন।
ক্রুদ্ধ পরশুরাম ২১ বার পৃথিবীকে একা হাতে ক্ষত্রিয়শূণ্য করেন। মহাভারতে পরশুরাম ভীষ্ম ও কর্ণের অস্ত্রগুরু। ক্ষত্রিয়শূণ্য করার অর্থই হ’ল সকল প্রকার যুদ্ধের অবসান হওয়া। আর যুদ্ধ না থাকলেই শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ প্রসস্থ হয়। আর বিশ্বশান্তির সন্ধানে আজও আমরা প্রতীক্ষা করছি!
আনন্দবাজার
আপনার মতামত লিখুন :