মোঃ মশিউর রহমান: করোনাভাইরাসের ভয়াল ছোবল দেশে দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চিত্রটাকে যে নগ্ন করে দিয়েছে, এই কথাটা এখন প্রায় সবাই বলেন। চিকিৎসকদের প্রস্তুতিহীনতা, হাসপাতালের সক্ষমতা, চিকিৎসা সামগ্রীর অপ্রতুলতা-সব কিছু যেন এক ঝটকায় সবার সামনে ভেসে উঠেছে। চিকিৎসা খাতের এমন ভঙ্গুর চিত্র এর আগে সম্ভবত এভাবে প্রকাশ পায়নি।
তবে অনেক দেশই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে করতে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, চিকিৎসা সামগ্রীর সরবরাহ বাড়িয়ে যাচ্ছে, সামনের দিকে যাতে সমস্যা না হয় তার পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যদিয়ে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের মান বাড়িয়ে তুলেছে ডাঃ ফজলে বারী। বিগত দিনের চিকিৎসা সেবায় হাসপাতালের বিভিন্ন দপ্তরের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পুরাতন হওয়ার কারনে উপজেলার জনসাধরনেরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। বর্তমানে মাননীয় মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রীর সহায়তায় নাজিরপুরের হাসপাতালকে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের মডেল তৈরি করেছেন ডা: ফজলে বারী।
এ হাসপাতালে ৩ টি বিভাগ চালু রয়েছে। * বহির্বিভাগ, * আন্ত বিভাগ ও * জরুরী বিভাগ। জরুরী বিভাগে ২৪ ঘন্টা ইমারজেন্সি মেডিকেল টিম দ্বারা ইমারজেন্সি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রুটিন ইপিআই (টিকাদান কর্মসূচী) এর পাশাপাশি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রদানে বরিশাল বিভাগে অন্যতম সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বহির্বিভাগে নির্ধারিত মূল্যে টিকিট কেটে সেবা নিতে হয়। বহির্বিভাগে সকাল ৯ টা থাকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। আর যেসকল রোগীর সার্বক্ষণিক সেবার প্রয়োজন হয়, তাদেরকে আন্তবিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়।রোগীদের চিকিৎসা সুবিধার্থে প্যাথলজি, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার চালু রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যে ঔষধের ব্যবহার রয়েছে। ২৪ ঘন্টা জরুরী মোবাইল স্বাস্থ্য সেবা চালু রয়েছে।
ডাঃ ফজলে বারী তিনি এ সংবাদ দাতাকে বলেন, হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমি পিরোজপুর-১ আসনের এমপি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে নিয়মিত আলাপ করে কাজ করি। তিনি স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উন্নয়নমূলক কাজ তদারকি করেন। এ ছাড়া তিনি হাসপাতালের নতুন উন্নতমানের অ্যাম্বুলেন্স, এক্স-রে, ইসিজি, আল্ট্রাস্নোগ্রাম মেশিন দিয়েছেন। হাসপাতালে প্যাথলজি পরীক্ষায় উন্নতমানের মেশিন, অপারেশন থিয়েটারের নতুন মেশিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়ার পর স্বাস্থ্যসেবায় অনেক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের হাসপাতালে এখন বর্তমানে সিজার,এপেন্ডিক্স সহ আরো ছোট-খাট অনেক অপারেশন নিয়মিত করছি। বর্তমানে উপজেলার বা বহিরাগত সব মিলিয়ে ২০০-২৫০ জন রোগী নিয়মিত সেবা পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি এ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) হিসেবে যোগ দান করেন ডাক্তার ফজলে বারী। এর আগে এখানকার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রোগী হয়রানি, রোগী দেখায় অনিয়ম ও অফিস সময়েও টাকার বিনিময়ে রোগী দেখার অভিযোগ ছিল। তিনি এখানে টিএইচ হিসেবে যোগদানের পর এসব অনিয়ম বন্ধ করে স্বাস্থ্যসেবায় উন্নয়নের মডেল তৈরি করেন।
উপজেলার রামনগর এলাকার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী মোঃ সাওন শেখ (২২) জানান আমি নিয়মিত এ হাসপাতাল থেকে উন্নত মানের সেবা পেয়েছি। আমি ডাক্তার এবং সেবিকাদের সেবায় কোন ত্রæটি পাই নাই। আসলে ডাঃ বারী স্যার আসার পরে এ হাসপাতাল যেন স্বাস্থ্য সেবায় উন্নয়নের মডেল তৈরী করেছেন। আমি তার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট। আমি তার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ তাকে সুস্থ্য রাখুক, এভাবে যেন সাড়াজীবন মানুষের সেবা করতে পারে।