কামরুল আহসান: একটা কথা বলা ঠিক হবে কিনা জানি না, তারপরও বলি। সলিমুল্লাহ খান যে-সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বুদ্ধিবৃত্তিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, প্রধান ফুকো-লাকা-দেরিদা, তা নিয়ে তার আগেই এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনা করেছিলেন মঈন চৌধুরী। মঈন চৌধুরীই প্রথম আধুনিক পশ্চিমা দর্শন নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনা করেন। তিনি যখন ফুকো-লাকা- দেরিদাকে নিয়ে আলোচনা করেন তখন বাংলাদেশে অনেকে এঁদের নামই শুনেনি। অনেকে নাম জানলেও তাদের পড়েননি। তা নিয়ে মঈন চৌধুরী এক লেখায় লিখেছেন দেরিদাকে নিয়ে একটা আলোচনায় তিনি কিছু ভুল করেছিলেন, কিন্তু, সেই ভুল ধরিয়ে দেয়ার মতো লোকও কেউ ছিল না।
সলিমুল্লাহ খান মূলত জনপ্রিয় হন ২০০৫ সালের পর; বিশেষত ২০১০ সালের পর টেলিভিশনের টকশোর মাধ্যমে। পরে ইউটিউব এসেও তাকে জনপ্রিয় করে। কিন্তু কথা হচ্ছে, সলিমুল্লাহ খানের আজ যা খ্যাতি, মঈন চৌধুরীর তা নেই। যারা খুব বইটই পড়েন তাদের অনেককেই আমি জিজ্ঞেস করে দেখেছি মঈন চৌধুরীর নাম শুনেননি। নাম শুনলেও তার কোনো বই পড়েননি। এ-নিয়ে অনেক দিন আগে আমি মোহাম্মদ আজমকে জিজ্ঞেসকে করেছিলাম-এর কারণ কী? সলিমুল্লাহ খান কেন একই বিষয় নিয়ে পরে আলাপ তুলেও মঈন চৌধুরীর চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলেন? মোহাম্মদ আজম উত্তর দিয়েছিলেন, কেউ আলোচনায় এলে তাকে নিয়ে আলোচনা করা যায়, যে-জনপ্রিয় হয়নি তাকে নিয়ে আলোচনা করা যায় না। মোহাম্মদ আজম আর বিস্তর ব্যখ্যায় যাননি।
কিন্তু উত্তরটা আমি নিজের কাছে পেয়েছিলাম। সলিমুল্লাহ খান মূলত পারফর্মার। নিজের কথা তিনি লিখেই খ্যান্ত হননি, তা নিয়ে ওয়াজ করেছেন। বাংলাদেশে লেখার চেয়ে মৌখিক বয়ানের যে জনপ্রিয়তা বেশি, তা আমরা মওলানাদের দেখেই জানি।