শাকিল আহমেদ: ‘মিডিয়া মালিক’-এর দায় কতোটা এর সাংবাদিক কর্মীদের কিংবা প্রতিষ্ঠানকে দিতে পারবো? রাষ্ট্র যে এখতিয়ার দিয়ে মিডিয়ার অনুমোদন দেন; কোনো না কোনো সাংবাদিক সেখানে সেই অধিকার নিয়েই কাজ করবেন। এখন সেই ‘মালিক’-এর কোনো অপরাধের দায় সাংবাদিককে কেন নিতে হবে? জানি এর উত্তরে অনেক কিছু মাথায় চলে এসেছে। ভারতে ঠিক এই কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণ ঠেকাতে মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের শেয়ার সাংবাদিক উদ্যোক্তার চেয়ে বিনিয়োগকারী কর্পোরেটকে কিছুতেই বেশি দেওয়া হয় না। ফলে সম্পাদকীয় নিয়ন্ত্রণ সাংবাদিকের হাতেই থাকে। রাজনৈতিক দলের নেতা ব্যাংক ডিফল্টার মিডিয়ার অনুমোদনই পান না। তার ওপর আছে স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন। আর আমাদের এখানে অল্প কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাদে পুরো টিভি ইন্ডাস্ট্রির মালিকানা লাইসেন্স মূলত বিনিয়োগকারীর নিয়ন্ত্রণে। সম্পাদকীয় নিয়ন্ত্রণও সংগত কারণে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
সেখানে বার্তা কক্ষের হাতে একটিই অবশিষ্ট অস্ত্র সেটি হলো তার সাংবাদিকতার জ্ঞান; যার বলে সে বলতে পারে খবরটি সঠিকভাবে না দিলে- দর্শক হারাবে প্রতিষ্ঠান; আর দর্শক হারালে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু যদি বিনিয়োগকারীর বিরুদ্ধেই কোনো খবর তৈরি হয় বা বিনিয়োগকারীর স্বার্থ পরিপন্থী কোনো খবর হয়- সেই খবরটি আর সঠিকভাবে দিতে পারে না আমাদের মিডিয়া। পত্রিকায় এ সংকট দূর করতে পত্রিকার লাইসেন্স পাওয়ার সময় ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসহ একজন সম্পাদকের নামও দিতে হয়।
সেই সম্পাদক নিজেই তখন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারেন। কিন্তু টিভিতে পুরোটাই মালিকানা নির্ভর প্রতিষ্ঠান; বার্তাকক্ষ তার অধীনেই কাজ করে যায়, যেতে হয়। বসুন্ধরার মালিকানাধীন মিডিয়াগুলোতেও দারুণ সব সহকর্মীরা আছেন। কিন্তু ব্যক্তি সেই সাংবাদিককেও দিন শেষে বহু পরিস্থিতি নিরবে হজম করে যেতে হয়; হচ্ছে। ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ পেতে চাইলে একটা পর্যায়ের পর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই হবে। সেজন্য দেশপ্রেমিক পেশাদার স্বাধীন গণমাধ্যমের কোনো বিকল্প নেই। সেই পথটি তৈরি করতে পুরো সাংবাদিক সমাজকে হয়তো নতুন করে ভাবতে হবে। ফেসবুক থেকে