শিরোনাম
◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫ ◈ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে: প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল, ২০২১, ০৫:৩৩ সকাল
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৩০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৫,০০০ টাকা মহামান্য রাষ্ট্রপতির উপহার : ‘গিফটের’ লোভে ঢুকলেই বিপদ

ডেস্ক রিপোর্ট : গেল সপ্তাহে বিকাশ ও দারাজের ফিসিং লিঙ্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় অজ্ঞাত প্রতারক চক্র। এবার একই ধরনের একটি লিঙ্ক ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ এবং টাইমলাইনে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। তবে এবারের প্রতারণার পদ্ধতি একটু ভিন্ন। বিষয়টিকে বিশ্বাসযোগ্য করতে ব্যবহার করা হয়েছে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের ছবি।

“Char Charity for Change” নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে মোহাম্মাদ মামুন নামের আইডি থেকে ওই পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টের শিরোনাম ছিলো “রমজান উপলক্ষে ৫,০০০ টাকা মহামান্য রাষ্ট্রপতির উপহার”। এতে লেখা হয়, সরকার যে ৫০০০ হাজার টাকা সবাইকে আর্থিক অনুদান হিসাবে দিচ্ছে তা নাকি বিকাশে ক্যাশ আউট চার্জ ছাড়াই উত্তোলন করা যাবে।

পোস্টকারী লেখেন, আমি এইমাত্র ৫০০০ টাকা পেলাম, আমার মত যারা পেতে চান তারা নিচের লিংকে ঢুকে বিকাশ বা নগদ একাউন্ট নাম্বার দিলেই টাকা চলে যাবে একাউন্টে। কোনো পিন নাম্বার দিতে হবে না।

তিনি যে লিংকটি (http://34.82.219.77/#staysafe#stayhome#singlechallenge#beautychallenge) দিয়েছেন তাতে প্রবেশ করলে বিকাশের লোগো সম্বলিত একটি পেজ দেখা যায়। তাতে বেশ কয়েকজনের নামের তালিকা দিয়ে বলা হয়েছে, এরা টাকা পেয়েছেন।

এরপরই তথ্যটিকে সঠিক প্রমাণের জন্য কিছু ইতিবাচক রিভিউ যুক্ত করা হয়েছে। তারপর টাকা পেতে আবেদনের প্রক্রিয়া দেওয়া হয়েছে। সেখানে নাম, পিতার নাম, বয়স, জেলা ইত্যাদি চাওয়া হয়েছে।

এদিকে ফেসবুক পোস্টের নিচে মাইনুল ইসলাম মিলন নামের একটি আইডি থেকে মন্তব্য করা হয়, “post delete koro taratari" (পোস্ট ডিলিট করো তাড়াতাড়ি)।

Yasir Arafat Shah নামের একটি আইডি থেকেও একই ধরনের পোস্ট দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইয়াসির আরাফাত শাহ বলেন, তার এক বন্ধু তাকে লিংকটি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে বলেন। তিনি রেজিস্ট্রেশন করেছেন বলেও জানান। কিন্তু এখনো টাকা পাননি। পরে তিনি তার ভুল স্বীকার করে বলেন, না জেনে রেজিস্ট্রেশন এবং পোস্ট করে তিনি ভুল করেছেন।

এ বিষয়ে বিকাশের কল সেন্টারের ফ্লোর সুপারভাইজার মিরাজ হাসান বলেন, এই মুহূর্তে বিকাশের এই ধরনের কোনো সার্ভিস চালু নেই।

বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, প্রথমেই আমাদের সচেতনতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রণোদনা বা প্যাকেজ প্রদান করা হলে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়। ব্যক্তিগত কোনো পেজে যদি বিকাশের মাধ্যমে টাকা প্রদানের কথা বলে তথ্য চাওয়া হয় তাহলে বুঝতে হবে সেটি প্রতারক চক্রের জাল।

এসব সাইবার প্রতারণা রোধে বিকাশের টিম কাজ করছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রতারক চক্রের বিষয়টি নিয়ে বিকাশ ইতিমধ্যেই পুলিশের সাইবার ইউনিটে অভিযোগ করেছে।

“Char Charity for Change” ফেসবুক গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ২৬ হাজার ৫শ'র মতো। এতে লাইক আছে ৯৭ হাজার ৫০৬ এবং ফলোয়ার ৯৯ হাজার ২২৭ জন। গ্রুপে দেওয়া মোবাইল নম্বরে কল করলে হাবিবুর রহমান নামে একজন ফোন রিসিভ করেন। তিনি ওই গ্রুপের অ্যাডমিন বলে জানান। ওই পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, গ্রুপে কীভাবে, কে পোস্টটি করেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। আমরা তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনবো।

তিনি আরও বলেন, একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ননপ্রফিটেবল এ গ্রুপটি পরিচালনা করা হচ্ছে। গ্রুপের সবাই প্রতিষ্ঠিত এবং সামাজিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ করে করোনার সময়ে গ্রুপটি অনেক অসহায় ও দরিদ্রকে সহায়তা প্রদান করেছে। এ ধরনের কার্যক্রম গ্রুপটি কখনোই সমর্থন করে না।

এ বিষয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের অনেক ফিসিং লিংক আছে যেগুলো বন্ধের কাজ চলছে। এসব লিংকে ক্লিক করা থেকে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এই ধরনের লিংক সম্পর্কে জানতে পারলে তা বন্ধেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, কেউ ৫০০০ টাকার লোভে পড়ে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকলেই বিপদে পড়তে পারেন। প্রথমেই একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, কোনো ব্র্যান্ডেড কোম্পানি এসব ফিশিং লিংকের মাধ্যমে অফার বা আয়ের সুযোগ দেয় না। ফিশিং লিংকের নকল ওয়েবসাইটের সংগে মূল কোম্পানির ওয়েবসাইটের নাম-ঠিকানার মিল থাকে না। এসব ক্ষেত্রে প্রথম কাজই হলো সচেতনতা। লোভনীয় অফারের লিংক পেলেই সেখানে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভুলবশতঃ কেউ ক্লিক করলে রেজিস্ট্রেশন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলেই সুরক্ষিত রাখা যাবে নিজের অ্যাকাউন্ট।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সিইসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, প্রথমেই আমাদের লোভের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। দ্বিতীয়ত, মূল ওয়েবসাইটের লিংকের সংগে ফিশিং লিংকটি ক্রস ম্যাচিং করে নিতে হবে। তৃতীয়ত, এই সব লিংকে ঢুকে কোনো ধরনের রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না।
সূত্র- বাংলাভিশন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়