কামরুল হাসান মামুন, ফেসবুক থেকে, গত ২৪ মার্চের নিউ সাইন্টিস্টের ইস্যুতে আমাদের মনের উপর খোলা সবুজ স্পেসের গুরুত্ব নিয়ে একটি আর্টিকেল ছাপিয়েছে। আর্টিকেলটির শিরোনাম হলো "Green spaces aren’t just for nature – they boost our mental health too!"
আমাদের ঢাকা শহরের দায়িত্বে যারা তারা বিষয়টা কি আদৌ বুঝে? এই ঢাকা শহরে কি গ্রীন স্পেস আসলেই আছে? যতটুকুওবা ছিল সেগুলোও খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। শুধু একবার আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে তাকান? আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম সেখানে প্রতিদিন সকালে কিংবা বিকালে হাটতে যেতাম। বেশ সবুজ ছিল। বিকাল হলে প্রচুর মানুষ এখানে এসে গল্প করতো। আমার মনে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকরাও ওখানে হাঁটতে যেত। বিশেষ করে মনে আছে ড. আহমেদ শরীফের কথা। উনি একটি গ্ৰুপের নেতৃত্ব দিতেন। খুব দ্রুত হাঁটতেন আর উনার হাঁটার গতির সাথে তাল মেলানোর জন্য অন্যরা দৌড়াতেন। এই হাঁটার মধ্যেই উনি বলতেন আর অন্যরা শুনতেন। ওখানে হাঁটতে যেতেন আমার চাচা অধ্যাপক মফিজুল মান্নানও। হাটতে গিয়ে মাঝে মাঝে উনাকেও দূর থেকে দেখতাম। সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এখন কংক্রিটের উদ্যান হয়ে গেছে। একই কথা বলা চলে সচিবালয়ের কাছে ওসমানী উদ্যানের ক্ষেত্রে।
লন্ডন শহরে প্রচুর পার্ক আছে যেমন হাইড পার্ক, রিজেন্ট পার্ক, রিকমন্ড পার্ক, বুশপার্ক, কিংস্টোন গার্ডেন, গ্রিনউইচ পার্ক, সেন্ট জামিনেস পার্ক, গ্রীন পার্কসহ অসংখ্য পার্ক। একই কথা বলা চলে বিশ্বের সভ্য দেশের অন্যান্য বড় শহরের ক্ষেত্রে। আমাদের অনেকগুলো খেলার মাঠ ছিল। সেগুলোতেও মানুষ একসময় বিকালে হয় খেলতে যেত নাহয় গল্প করতে যেত। ওসব মাঠ এখন বিভিন্ন ক্লাবের দখলে চলে গেছে। ওগুলোতে এখন আর সাধারণ প্রবেশাধিকার নাই। আমি যখন বার্লিনের পটসডাম শহরে ছিলাম তখন বিয়াংকাকে নিয়ে আমরা প্রায়ই ওখানকার পার্কে যেতাম। কি যে ভালো লাগতো। কেউ কারো দিকে তাকাতো না। কেউ কাউকে হেনস্থা করতো না। এইরকম একটা শহর আমরা আজও বানাতে পারলাম না। আগে যতটুকু গ্রীন স্পেস ছিল তাও হয় নাই হয়ে গেছে অথবা যাওয়ার মত পরিবেশ নাই। এইসবই প্রমান করে আমাদের নেতৃত্ব কত অশিক্ষিত!
আমি আমার বাসটি এমন একটি জায়গায় কিনেছি যেখানে আমার বাসার সামনেই বিশাল খেলার মাঠ। বারান্দা থেকে তাকালে প্রচুর সবুজ এবং খোলা প্রান্তর দেখা যায়। ফ্লাট কেনার সময় এই বিষয়টা খুবই গুরুত্ব দিয়েছিলাম।