জামাল হোসেন: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে যৌতুকের টাকার জন্য গৃহবধুর ওপর তিনদিন ধরে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে বাড়ীতে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে পাষন্ড স্বামী ও শশুরের বিরুদ্ধে। গৃহবধুর বাবা-মা জনপ্রতিনিধি ও লোকজনের সহযোগীতায় সোমবার সকালে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
পারিবারিক সুত্র জানায়,জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের দিনমজুর রবিউল ইসলামের সুন্দরী মেয়ে লালবানুকে(২৪) গত পাঁচ বছর আগে একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে হাসানের(৩০) সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে চার বছর বয়সের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর বাবা রবিউল ইসলাম বলেন,বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ে লালবানুকে যৌতুকের টাকাসহ নানান ধরনের মালামালের দাবীতে জামাই হাসান ও তার বাবা ইব্রাহিম অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। আমি মেয়ের সুখের কথা ভেবে কষ্ট করে একবার নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি এবং ৬০ হাজার টাকা মুল্যের একটি গরু কিনে দিয়েছি। সেই সাথে দিয়েছে বিভিন্ন প্রকার আসববাপত্র। তারপরও তারা আমার মেয়েকে যৌতুকসহ নানা দাবীতে মারধর করেই থাকে। বেশ কিছুদিন ধরে তারা আমার কন্যার নিকট ৫০ হাজার টাকা যৌতুক বাবদ দাবী করে আসছিল।
কিন্তু আমার মেয়ে আমার বাড়ী থেকে ওই টাকা নিয়ে যেতে রাজি না হওয়ায় আমার জামাই হাসান ও বিয়াই ইব্রাহিম গত দিন ধরে আমার মেয়ে লালবানুকে অমানুষিক নির্যাতন করে বাড়ীতে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। তারা সর্বশেষ সোমবার সকালেও আমার মেয়েকে মারধর করেছে। আমরা ঘটনার কথা শুনে লোকজন নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। তারা আমার মেয়েকে গোপন অঙ্গে মারধর করেছে যাতে কাউকে নির্যাতনের ক্ষত দেখাতে না পারে। আমার মেয়েকে তারা অনেক দিন ধরেই নির্যাতন করে আসছে,মেয়েকে তারা ঠিকমত খেতে না দেয়ায় হাত-পা শুকিয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী আশাদুল হক বলেন,আমি বহু নারীকে নির্যাতনের ঘটনা দেখেছি। তবে এমন অমানুষিক নির্যাতন আগে কখনও দেখেনি। লালবানুর সমস্ত শরীর আঘাতে কালশিরে পড়ে গেছে। শরীরের এমন সব স্থানে আঘাত করা হয়েছে,যা কোন নারীর পক্ষে সহজে কাউকে দেখানো সম্ভব নয়।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইলাম,ঘটনার ব্যাপারে অভিয়োগ পাওয়ার পর পরই হাসপাতালে অফিসার ফোর্স পাঠানো হয়েছে। গৃহবধু লালবানু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।