জাহিদুল ইসলাম সজীব: হেফাজতকে প্রাসঙ্গিক করে তোলার দুটো প্রক্রিয়া। এর একটি সম্পাদন করছে সরকার। আরেকটি করছে বাম ঘরানার কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা। সরকার হেফাজতকে কখনো আক্রমণ করে, কখনো মাথায় তোলে এবং পাড়ায়-মহল্লায় তাদের মাহফিলগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতারা পৃষ্ঠপোষকতা করেন। অন্যদিকে বাম বুদ্ধিজীবীরা হেফাজতকে সরকারবিরোধী ও মজলুমের প্রতিনিধিত্বশীল শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একাডেমিক আলাপ জারি রাখে। রাজনীতির ময়দান থেকে জনগণের অধিকার কিংবা রুটি-রুজির প্রশ্নকে আড়াল রাখতে বারবার ধর্মের বিতর্ক নিয়া আসার উপলক্ষ্য তৈরি করে হেফাজত। যা সরকারকে স্বস্তি এনে দেয় প্রকারন্তরে। এখানে সবচেয়ে বড় ফায়দা হলো বিরোধীদল হিসেবে বিএনপিকে দ্বিতীয় সারিতে ঠেলে দেওয়া।
গত কয়দিনের রাজনীতিতে বিএনপির চেয়ে হেফাজত বেশি আলোচিত এবং রাজনীতির বিতর্কে ধর্মীয় এজেন্ডাকে প্রধান এজেন্ডায় নিয়ে আসা গেলে ভোটাধিকার কিংবা অন্যান্য প্রশ্ন মাইনর হয়ে যায় অটোমেটিক। হেফাজত যদি ধর্মীয় এজেন্ডার সঙ্গে ভোটাধিকার বা নাগরিক অধিকারের প্রশ্নে আন্দোলন করতো তবে না হয় সরকারের জন্য সেটি সমস্যা হতো। কিন্তু আজও বাবুনগরী পরিষ্কার করেছেন, সরকারের সঙ্গে তাদের বিরোধ নয়। বিরোধ নাস্তিকদের সঙ্গে। এখন বিএনপির সামনে দুটো রাস্তা, হেফাজতকে সে সরকারের সঙ্গী হিসেবে দেখবে এবং তার শক্ত বিরোধিতা করবে অথবা হেফাজতের নেতৃত্বে ধর্ম রক্ষার আন্দোলনে সামিল হয়ে হেফাজতকে দিয়ে নিজের এজেন্ডাগুলো, যেমন ভোটাধিকারের বিষয়টি সামনে আনবে।
প্রথমটি করার সামর্থ বিএনপির নেই, কেন নেই সেই আলাপ নিশ্চয়ই দরকার হবে না এবং দ্বিতীয়টি করলে বিএনপিকে হেফাজতের নেতৃত্ব মেনে নিতে হবে। যা তার জন্য পরিস্কার আত্মঘাতী। মোদ্দা হইলো, হেফাজত তথা ইসলামপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত বিএনপির জন্য পরিষ্কার বুমেরাং। যদিও অতীতে বিএনপি তাদের দিয়ে আওয়ামী লীগকে ঘায়েল করতো। ২০১৩ পরবর্তী রাজনীতিতে ধর্মকে আওয়ামী লীগই অনেক বেশি স্পেসের ব্যবস্থা করে দিয়ে বিএনপিকে একপ্রকারে খেয়ে দিছে আরকি। আহা! ৫ মে বিএনপি ভেবেছিলো আরেকটি ৭ নভেম্বর এলো বুঝি। জিয়ার একটি কথা ছিলো, তিনি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে দেবেন। আওয়ামী লীগ বিএনপির জন্য ইসলামপন্থী কার্ডকে কঠিন করে দিয়েছে। খুবই খুবই কঠিন। এই কার্ড এখন কেবলই আওয়ামী লীগের। ফেসবুক থেকে