আতিকুজ্জামান ফিলিপ: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে দেশব্যাপী হেফাজতের নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া চরম ধ্বংসাত্মক নাশকতা আর অরাজকতা দেখে যতোটুকু না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি হেফাজতের বিরুদ্ধে সরকারের নীরবতা আর শীতলতা দেখে। জাতির জনকের মূর্যাল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং দেশের বিভিন্ন থানা ও সরকারি অফিসে অগ্নি সংযোগসহ বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে যে ঔদ্ধত্য তারা দেখিয়েছে, তা যদি হেফাজত ছাড়া অন্য কেউ করতো তাহলে নিশ্চই সরকারের পক্ষ থেকে আমরা অন্যরকম আচরণ দেখতাম। হুকুমের আসামি হিসেবে নিশ্চই এতোক্ষণ বাবুনগরী বা মামুনুলরা গ্রেফতার হয়ে যেতো যদি শুধু তারা হেফাজতের কেউ না হয়ে অন্যকোনো সংগঠনের কেউ হতো। এমনকি খোদ আওয়ামী লীগের কেউ হলেও হয়তো এমন ছাড় পেতো না যতোটা ছাড় বাবুনগরী বা মামুনুলরা পাচ্ছে।
লক্ষ্য করলাম, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীরা বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে এসব ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে ‘উচশৃঙ্খল জনতা’ শব্দটি ব্যবহার করছে। হেফাজতের নাম পর্যন্ত নিতে সাহস করছে না। কী অবিমৃষ্যকারী দুর্বলতা। যেন ‘ভাসুরের নাম মুখে নিতে মানা’। অথচ বাস্তবতা হলো বাবুনগরী বা মামুনুলরা শুধু সরকারের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, তারা এ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম আর ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ ‘রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
বাবুনগরী বা মামুনুলদের সঙ্গে আলগা পিরিত বা গরল রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে সরকার তার বিরুদ্ধে বাবুনগরী বা মামুনুলদের বিরুদ্ধচারণ মেনে নিলেও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাবুনগরী বা মামুনুলদের এ বিরুদ্ধাচারণকে সরকারের মেনে নেওয়া মোটেও উচিত হয়নি। তাদের এভাবে ছাড় দেওয়া মোটেও উচিত হয়নি। আজ থেকে পঁঞ্চাশ বছর আগে এ বাবুনগরী বা মামুনুলদের পূর্বসূরীদের বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধ করে যে শহীদেরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঝরিয়ে দিয়ে এ রাষ্ট্রটি আমাদের উপহার দিয়েছিলো সে শহীদদের হারিয়ে যাওয়া আত্মা নিশ্চইয় একদিন বাবুনগরী বা মামুনুলদের সঙ্গে সরকারের এ আপোসকামিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। ফেসবুক থেকে