রাশিদ রিয়াজ : তিন বছরেই পাকিস্তান ভারতের তামা রফতানির বাজারের অনেকটা দখলে নিয়েছে। আর ভারত এসময়ে তামা রফতানির পরিবর্তে আমদানি শুরু করেছে। পরিবেশ দূষণ ইস্যুতে তামিল নাড়ুতে তামা উৎপাদন কারখানা বন্ধ করার পর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের তামা আমদানি বাড়ছেই। দি প্রিন্ট
আগে ভারতের তামা রফতানি হত চীনে। এখন পাকিস্তানি তামা চীনের বাজার দখল করছে। ভারতের বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানায় বছরে ৪ লাখ টন তামা উৎপাদন হত। ২০১৮ সালের মে মাসে তামিল নাড়ুর পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড দূষণের কারণে ওই কারখানাটি বন্ধের সুপারিশ করে। স্বাস্থ্যহানির কারণে কারখানাটি বন্ধের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদও জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা। কেয়ার রেটিং’ এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে গত দুই বছরে ভারতের তামা উৎপাদন সক্ষমতা ভারতে অর্ধেকে নেমে এসেছে। তার মানে তামা উৎপাদন শুরু না হওয়া পর্যন্ত আগামী বছরগুলোতে পণ্যটির আমদানিকারক দেশ হিসেবেই থাকবে ভারত। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারতে পরিশোধিত তামা আমদানি হয়েছে ৯২ হাজার ২৯০ টন। এর আগের অর্থবছরে তামা আমদানির পরিমান ছিল ৪৪ হাজার ২৪৫ টন। একই সঙ্গে ভারতের তামা রফতানি ৩ লাখ ৭৮ হাজার টন থেকে নেমেছে ৪৭ হাজার ৯১৭ টনে। রফতানি বাবদ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারতের আয় হয়েছিল ২ বিলিয়ন ডলার। বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ শিল্পে তামার ব্যবহার সর্বাধিক। এছাড়া পরিবহন, তৈজষ, ভবন নির্মাণ ও প্রকৌশলী কাজে এর বিবিধ ব্যবহার আছে।
কোভিড লকডাউনের পর গত সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন শিল্পখাতে তামার চাহিদা বিপুলভাবে বেড়েছে। এছাড়া ইস্পাত পণ্যের মত চীনে ভারতের তামার কদর ছিল বেশ। ভারতের তামা রফতানি হ্রাস পাওয়ায় বিশ^বাজারে তামার দামও বেড়ে যায়। পরিশোধিত তামার দাম টন প্রতি উঠেছে সাড়ে ৬ থেকে ৬ হাজার ৮শ ডলারে। যা গত বছর ছিল ৫ হাজার ৯২৩ ডলারে। একই সঙ্গে চীনের বাজারে যখন ভারতের তামার রফতানি ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে তখন একই বাজারে পাকিস্তানের তামার রফতানি শুণ্য দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্টস অর্গানাইজেশনের পরিচালক অজয় শাহি বলেন ভূকৌশলগত অবস্থান বা সুবিধার দিক থেকে চীনে তামা রফতানিতে ভারত এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তান এখন এক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর আগে তামা রফতানিতে প্রধান দেশ ভারত হলেও এখন পিছিয়ে গেছে এবং বাজার হারিয়ে ফেলেছে।