নবনীতা চৌধুরী : আমি আর আমার মা করোনা টিকা নিলাম ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে। এতো সুন্দর অভিজ্ঞতা হলো যে কৃতজ্ঞতা আর আবেগে মনটা ভরে গেছে। কিডনি গবেষণা ইনস্টিটিউট আমাদের কেন্দ্র- সরকারি হাসপাতাল ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত ঝকঝক তকতক করছে। কোথাও কোনো চেঁচামেচি ঝগড়াঝাটি নেই। নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত টিকাদান কেন্দ্র কোনদিকে তা স্পষ্ট করে তীরচিহ্ন দিয়ে নির্দেশিত আছে। পরশুদিন রাতে আমার জন্য নিবন্ধন করেছিলাম গতকালকেই (৯ ফেব্রুয়ারি) এসএমএস পেয়ে গিয়েছিলাম।
কিন্তু মায়ের নিবন্ধন ২৬ জানুয়ারি করার পরেও এসএমএস আসেনি। আজ দুজনেই কেন্দ্রে চলে এলাম। ভ্যাক্সিন কার্ড জমা দিয়ে আলো বাতাসে ভেসে যাওয়া ঝকঝকে ওয়েটিং রুমে কিছুক্ষণ বসতে না বসতেই ডাক এলো, ভ্যাক্সিন দিলাম, তারপর আবার ঝকঝকে ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করলাম আধাঘণ্টা। এর মধ্যে মুগ্ধ হলাম তরুণ ডাক্তার সাইফুদ্দিন শুভ্রর সাইফুদ্দিন শুভ্র ব্যবহার, উৎসাহ আর সহযোগিতায়। তাঁর মাধ্যমে পরিচয় হলো আরো কয়েকজন ডাক্তার এবং নার্সের সঙ্গে। হাসপাতালের মতোই এই মানুষগুলোও ঝকঝক করছেন। সবাই জানালেন, এনআইডি নিয়ে এলেই তারা নিজেরাই রেজিস্ট্রেশন করে টিকা দিয়ে দেবেন।
আমরা সপরিবারে অভিভ‚ত পুরো ভ্যাক্সিন অভিজ্ঞতায়। প্রথমত https://surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটটি এতো ব্যবহারবান্ধব হয়েছে সত্যি সত্যিই কয়েক মিনিটে নিবন্ধন শেষ। সাইট ২৬ তারিখে লাইভ হতে না হতেই ভাই জাপান থেকে মায়ের নিবন্ধন, ভাইয়ের বউ তার বাবা-মায়ের নিবন্ধন আর বোন জামাই তার মায়ের নিবন্ধন করে ফেললো। ভ্যাক্সিন কার্ড প্রিন্ট নেওয়া গেলো সাইট থেকে। এমনকি নিবন্ধনের স্ট্যাটাস পর্যন্ত নিয়মিত দেখা সম্ভব সাইটে।
এই নিয়মনিষ্ঠ, প্রযুক্তিনির্ভর, সকলের জন্য সমান সুযোগ ব্যবস্থাকারী, ঝকঝকে তকতকে, সুব্যবস্থাপনার বাংলাদেশের চেহারাটা চোখে লেগে থাকবে, মনে গেঁথে থাকবে অনেকদিন। দেশটা বদলে যাচ্ছে, সমানতালে আমাদের বদলাতে হবে এখন।