মুনশি জাকির হোসেন: সংঘবদ্ধভাব যেমন সামষ্টিক কল্যাণ বয়ে আনে, তেমনি সামষ্টিক ক্ষতিরও কারণ, ক্ষেত্র, তৈরি প্রস্তুত করে। পেশাগত সংঘবদ্ধতা জনমানুষের সার্বিক কল্যাণের পথে এক কন্টকময় প্রতিবন্ধকতার নাম! শিক্ষক সমিতি, আইনজীবী সমিতি, বিসিএস ক্যাডার সমিতি, এসব সমিতিগুলো বাস, ট্রাক সমবায় সমিতির মতোই আচরণ করে চলছে। যারা নিত্য অন্তর্ঘাত পথ প্রশস্ত করছে। যখনই কেউ কোনো ফৌজদারি অপরাধ করছে, পেশাগত অসাদাচারণ করছে তখনই তার পক্ষে জাস্টিফিকেশন চলে আসছে। ওই সংঘের মধ্য থেকে কেউ যদি সত্য উচ্চারণ করে তাহলে তাকে ওই শ্রেণি, গোত্র থেকে বিতাড়িত করা হয়। এটি অনেকটা গ্রাম্য সমাজে এক ঘরে করে রাখার মতো। কোনো ডাক্তার অপরাধ করলে আইনি প্রতিকার কোথায়? কোনো আইনজীবী পেশাগত অসদাচরণ কিংবা ফৌজদারি অপরাধ করলে আইনজীবীদের সংঘবদ্ধ পক্ষাবলম্বন আইনের শাসনের কন্টকময় অন্তর্ঘাত পথ তৈরি করছে ক্রমাগতভাবে। এই সংঘবদ্ধতা এখন চরম তলানিতে যেয়ে পৌঁছেছে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে লাশবাহী গাড়িগুলোও আজকাল এই সংঘবদ্ধভাব নামক সামস্টিক দুর্বৃত্তের দুষ্ট চক্রে অক্টোপাসের মতো আটকে গেছে; মর্গের লাশ পরিবহনেও সংঘবদ্ধতা!
আমজনতা সংঘবদ্ধতার চোরাবালীতে ডুবন্ত। সেই অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষটির মতো আমরাও অসহায় আত্মসমর্পন করে নিজেদের বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির তালিকাতে নিয়ে যাচ্ছি। সাংবাদিক, মিডিয়া, বিমান, রেল, সড়ক , হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়, সিটি কর্পোরেশন এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে নেই যেখানে এই সংক্রামক ব্যাধির বিস্তার ঘটেনি। এই অশুভ চক্রের একটি চমৎকার সাদৃশ্য বিদ্যমান; তারা কিন্তু সকলেই শিক্ষিত উপার্জনজীবি, তাদের ভেতর কোনো কৃষক, দিনমজুর, প্রান্তসীমার শ্রমিক মানুষেরা কিন্তু নেই। এটি সত্য যে, শিক্ষা আমাদের সচেতন করেছে। আমাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে সংকীর্ণ করেছে, আমাদেরকে স্বার্থপর করেছে। আমাদের মধ্যের সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশকে ধ্বংস করেছে। এতো কিছুর মধ্যেও অনেকেই ব্যতিক্রম আছেন। যে, যারা স্রোতের বিপরীতে চলে, চলছেন। ফেসবুক থেকে
আমিরুল