মনিরুল ইসলামঃ [২] জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ও আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তদের বিশেষ স্বীকৃতির দাবি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা, প্রযোজক ও চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা)।
[৩] রবিবার ১৭ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তির মঞ্চে আজীবন পুরস্কারপ্রাপ্ত এ অভিনেতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এই দাবি তুলে ধরেন।
[৪] তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজীবন সম্মাননা পেয়ে আমার মিশ্র অনুভূতি হয়েছে। একধরনের আনন্দঅশ্রুও হয়েছে। আবার মনে হয়েছে এরপর আমাকে আর পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হবে না।
[৫] প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আজীবন পুরস্কারপ্রাপ্তদের যেন সবসময় সম্মান জানানোর ব্যবস্থা করা হয়। তাদেরকে ভিআইপি সন্মানে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললেন।
[৬] তিনি প্রতিবছর যারা পুরস্কার পাচ্ছেন তাদের ৪ বছরের জন্য না হলেও অন্তত ২ বছরের জন্য হলেও সিআইপি (কালচারাল ইমপর্টেন্ট পারসন) ঘোষণা করা হোক। শুধু তারকা নয়, চলচ্চিত্রের সব ধরনের শিল্পী, পরিচালক ও কুশলীদের জন্য রেসনিং ব্যবস্থা করার অনুরোধ করছি। আপনি যদি নির্দেশ করেন, আমি মনে করি বিএফডিসির এমডির মাধ্যমে এটি করা হলে সাধারণ কোনও শিল্পী, কর্মচারী মৃত্যুর আগ পর্যন্ত না খেয়ে মারা যাবেন না।
[৭] রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠান। এতে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৩১টি পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। গণভবন থেকে অন্তর্জালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
[৮] প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
[৯] এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। তথ্যসচিব খাজা মিয়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
[১০] মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩ বছর পর মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা প্রযোজনা করেছিলেন ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্র। যে ছবি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
[১১] সোহেল রানা উল্লেখ করেন, এক সাক্ষাৎকালে বঙ্গবন্ধু তাকে আদেশ দিয়েছেন, চলচ্চিত্রের জন্য এভাবেই কাজ করে যেতে। চলচ্চিত্রে থেকে যেতে বলেছিলেন। তাই ৪৬ বছর ধরে চলচ্চিল ছেড়ে কোথাও যাই নি। তার জন্যই নিজের এই প্রাপ্তি বলে মনে করেন সোহেল রানা। তাই বঙ্গবন্ধুকে তিনি উৎসর্গ করেন জীবনের সেরা পুরস্কার আজীবন সম্মাননা।
[১২] এবার অপর আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।
আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করছেন সোহেল রানা
২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ২৫টি ক্যাটাগরিতে ৬টি যুগ্মসহ ৩১ জনকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়-
[১৩] আজীবন সম্মাননা: মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: ন’ ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিল অন্ধকারে
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা: তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী: সুনেরাহ বিনতে কামাল (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেতা: ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হওয়ায়)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেত্রী: নারগিস আক্তার (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা: জাহিদ হাসান (সাপলুডু)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান ইমন (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ নৃত্যপরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃণাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো- শাটল ট্রেন)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয যাহরা ঐশী (মায়া, মায়ারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার- কালো মেঘের ভেলা) ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (চল হে বন্ধু- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ সুরকার: প্লাবন কোরেশী (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল- মায়া দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুদ পথিক (মায়া-দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: জুনায়েদ আহমেদ হালিম (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বসু ও ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: খন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: রাজু (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
আপনার মতামত লিখুন :