রাজু চৌধুরী : [২] সাবেক স্বামী পরিচয় দানকারী পরবর্তীতে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক চলছিল আর অবৈধ এই সম্পর্ক নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে গৃহবধূ সুপ্তি মল্লিককে শ্বাসরোধে হত্যা করেন নিজেকে সাবেক স্বামী দাবি করা জাকের হোসেন (২৭)। গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়ে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে জাকের।
[৩] শনিবার(১৬ জানুয়ারি) খুনের রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে পিবিআই, চট্টগ্রাম (মেট্রো) জানিয়েছে, ১৪ জানুয়ারি ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য উদঘাটন করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাকের হোসাইনের (২৭) বাড়ী লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর আফজাল গ্রামে, তার পিতার নাম বাহার উদ্দিন। তবে বর্তমানে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকার বাসিন্দা। আদালতের জবানবন্দিতে জাকের জানায়, কাপ্তাইতেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০১৪ সাল থেকে সুপ্তির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। ২০১৮ সালে তারা গোপনে বিয়েও করেন। চারমাস সংসার করার পর সুপ্তি তাকে তালাক দিয়ে বাসুদেবকে বিয়ে করেন। কিন্তু তাদের মাঝে গোপন নম্বরের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল। ঘটনার দিন সুপ্তির বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে সে ঢুকে পড়ে। সেসময় দুজনের কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে রাগের মাথায় সুপ্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।অথচ ওই গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে আড়াই মাস ধরে জেল খাটছেন তার স্বামী বাসুদেব চৌধুরী ও ভাসুর অনুপম চৌধুরী। উল্লেখ্য যে, গত ৪ নভেম্বর রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার পানওয়ালা পাড়ায় নাছিমা মঞ্জিলের একটি ফ্ল্যাট থেকে গৃহবধূ সুপ্তি মল্লিকের (২২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বাবা সাধন মল্লিক বাদি হয়ে সুপ্তির স্বামী বাসুদেব চৌধুরী ও ভাসুর অনুপম চৌধুরীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে তখন তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
[৪] পিবিআই জানায়, সুপ্তি মল্লিক খুনের মামলাটি তাদের কাছে সপ্তাহ দুয়েক আগে থানা পুলিশ হস্তান্তর করেন। এরপর তারা মামলাটির আনুুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত করতে গিয়ে তারা প্রথমে জাকের হোসেনের অবস্থান শনাক্ত করেন। এ জাকের হোসেনই ঘটনার দিন সুপ্তির ফ্ল্যাট থেকে বের হয়েছিলেন। যেটি পাশের লোকজন দেখেছিলেন। মূলত এসব বিষয় আমলে নিয়ে তদন্ত করার একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার ১৪ জানুয়ারি জাকের হোসেনকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পিবিআই, চট্টগ্রাম (মেট্রো) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তভার পাওয়ার পর আমরা মামলাটি বিভিন্নভাবে তদন্ত করি। একপর্যায়ে সুপ্তির সাবেক প্রেমিক জাকের হোসেন সন্দেহের তালিকায় আসে। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের পরে সে আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। পিবিআই সূত্রে জানা যায়, মামলায় জাকের হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে দ্রুত চার্জশীট দেয়া হবে। বর্তমানে কারাগারে থাকা সুপ্তির স্বামী ও ভাসুরের অব্যাহতি চেয়ে আবেদনও করা হবে।