সোহেল রহমান: [২] বুধবার (০৬ জানুয়ারি) দসরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
[৩] অর্থমন্ত্রী বলেন, অফিশিয়ালি এ টাকাগুলো আসাতে আমাদের অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতি অনেক বেগবান হচ্ছে। আমি মনে করি আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। পুরাপুরি না হলেও বেশির ভাগই আমরা সফল হয়েছি। আমরা চাই কালো টাকা সাদা হোক। যখন কালো হয়ে গেছে তখন সাদা হবে। আর কালো হওয়ার কারণ নিয়ে অনেক বার ব্যাখ্যা দিয়েছি।
[৪] করোনাকালীন ছয় মাসে ১০ হাজার কোটি টাকার অধিক কালো টাকা সাদা হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সাদা করতে চাই বলে সাদা হলো। আমাদের বাজেটে আছে। বাজেট বক্তৃতায় আছে আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো এ্যাড্রেস করতে চাই। প্রথমেই আমাদের রেমিট্যান্সে প্রণোদনা চালু করেছি। আরো একটা ক্ষেত্র রয়েছে যেটা প্রতিটা দেশের জন্য বড় এলাকা। সেটা হলো আবাসন খাত। এই আবাসন খাতে স্ট্যাম ফি ও ডিউটি বাড়তি থাকার কারণে কোন রেজিস্ট্রেশন হয় না। ফলে সরকার কোন রাজস্ব পাচ্ছে না। বাড়ি বিক্রি হচ্ছে অর্থচ বিক্রি দেখাচ্ছে না। আর বিক্রি যেখানে ১০ টাকা সেটা দেখাচ্ছে ১ টাকা। ১০ টাকার উপরে গেলে স্ট্যাম ডিউটি দিতে লাগে সেজন্য স্ট্যাম ডিউটি কমিয়ে দিয়েছি। এ রকম যেখানে যেখানে হাত দেয়া দরকার সেখানে সেখানে করেছি৷ সেগুলো করার কারনেই এখন কালো টাকা সাদা হচ্ছে। যেমন আমাদের পুঁজিবাজারসহ এটা সব দেশেই করে।
[৫] অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকা আমাদের পলিসিগত কারণে কালো হয়। অনেকেই ট্যাক্স দেয় আবার অনেকেই ট্যাক্স দেয় না। আবার ট্যাক্স রেট অনেক বেশি ছিলো। আস্তে আস্তে যদি এগুলো কমিয়ে আনতে না পারি তাহলে হবে না। আমাদের সুদের হার অনেক বেশি ছিলো। এতো বেশি সুদহারে কোন দেশে শিল্পায়ন হয় না। পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না। আমরা সেখানেও সফল মোটামুটি আমরা যেটি করে দিয়েছি সেটা সবাই গ্রহণ করেছে। এখন যে ৯ শতাংশে ঋণ পাচ্ছে তা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিদেশে টাকা রাখলে উল্টো টাকা দিতে হবে। সেখানে লাভ পায় না, যদিও পায় সেটা এক থেকে দেড় শতাংশ। সেখানে আমাদের দেশে ৬ শতাংশ পাচ্ছে। এটা হলো আমাদের ইতিবাচক দিক। এটা আমাদের দেখতে হবে।
[৬] তিনি বলেন, আমাদের অনেকের টিআইএন নাম্বার আছে কিন্তু আমরা ট্যাক্স পাচ্ছি না। টিআইএন নাম্বার দিয়ে কী হবে যদি ট্যাক্স না পাই। সে কাজটি করার জন্য আমরা ফুল অটোমেশনে যাচ্ছি। যতোদিন পর্যন্ত অটোমেশন শেষ করতে না পারি ততোদিন পর্যন্ত আমাদের এ সমস্যা থাকবে। সেজন্য সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে রাজস্ব খাতে অটোমেশনের।
[৭] অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রেমিট্যান্স গত এক বছরে বা ছয় মাসে আমাদের অর্জন হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। পুরা বছরে আমাদের ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা বেশি আসবে। এই টাকাগুলো কোথায় যাবে পুঁজিবাজারে যাবে। অফিশিয়ালি এ টাকাগুলো আসাতে আমাদের অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
[৮] তিনি বলেন, আমাদের আমদানি কবে গেছে, যদি আমদানি বেশি থাকতো, তাহলে আমাদের ডিউটি বাড়তো। আমাদের আয়করের রেশিও ভালো আছে। তুলনামুলক আমরা অনেক দেশের থেকে ভালো আছি।
[৯] পুঁজিবাজার নিয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে যদি বিদেশি বিনিয়োগ থাকতো তাহলে তারা যেকঁন মুহূর্তে পুঁজি তুলে নিতে পারতো। যেটা আমরা ১৯৯৭ সালে দেখছি। সাউথ এশিয়ার সাথে যেটা হলো। সে সময় বিদেশিদের টাকা তারা তুলে নিয়ে যাওয়ায় অর্থনীতি বসে গেছে। আমাদের এ ধরনের চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ আমাদের ফিসক্যাল পলিসি ও মিনটরি পলিসি, বাজেট, ফাইভইয়ার প্লান সঠিক আছে। সেজন্য আমরা ভালো আছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরমুখিতা কম, আমাদের উন্নয়ন না বাড়ালে বন্ধ হয়েযাবে এধরনের কোন কিছু নাই। আমরা আমাদের দেশে চাহিদা ও জনগণের চাহিদা সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত আছি। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।