শিমুল মাহমুদ: [২] দেশে প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ আক্রান্ত হন ক্যান্সারে, মারা যান প্রায় এক লাখ। দেশে এই কালব্যাধির চিকিৎসায় একমাত্র সরকারি হাসপাতাল রাজধানীর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনইসিআরএইচ)। সরকারি ক্যান্সার হাসপাতাল।
[২] প্রতিদিন এই হাসপাতালে থাকে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়, সামাল দিতে কর্তৃপক্ষের রীতিমতো হিমশিম অবস্থা। সকালে ডাক্তারের সিরিয়াল পেতে হাসপাতালের সামনেই রাত কাটান অনেক রোগী, বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা সাধারণ ও দরিদ্র মানুষ।
[৩] বুধবার রাত ১১ বেজে ৫৫। কনকনে শীত, হিমেল বাতাস। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সামনে কম্বল আর কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে কিছু মানুষ। কাশির দমকে ঘুম ভাঙলো পঞ্চাশোর্ধ মোহাম্মদ হাশেম আলীর। মাদারীপুর থেকে এসেছেন, তার ফুসফুসে ক্যান্সার।
[৪] তিনি বললেন, ‘ঢাকা আইতে আইতে দুপুরে ২টা বাইজা গেছে। ডাক্তার দেখাইতে পারি নাই। থাকার জায়গা নাই, এখানেই ঘুমাইতাছি। সকালে ডাক্তার দেখাবো। যদি ভর্তি দেয় থাকবো, না হলে গ্যারামে ফিরে যাবো।’
[৫] পারভেজ এসেছেন রংপুর থেকে। তার মায়ের কিডনীর পাশে টিউমার, দ্রুত অপারেশন না হলে ক্যান্সার ছড়িয়ে পরবে। চিকিৎসার খরচ সামলাতে জমিজমা বিক্রি করে পরিবারটি এখন প্রায় নিঃস্ব। তিনি বললেন, ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা ভালো। তারচেয়ে বড়ো স্বস্তি, এখানে ঔষধ কিনতে হয় না, চিকিৎসা খরচ নেই।
[৬] ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান জানিয়ে ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) বলেছে, বাংলাদেশে রোগীদের অনেকেরই এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই।
[৭] এই অসহায় রোগীদের সুস্থতা অর্জনের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালটি।
[৮] হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী মোশতাক হোসেন বললেন, সারাদেশ থেকে রোগীরা আসেন। প্রতিদিন হাসপাতালের সামর্থ্যের ৪ থেকে ৫ গুণ চাপ সামলাতে হচ্ছে।
[৯] তিনি জানান, সেবার পরিধি বাড়াতে কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের যেসব সমস্যা, সেগুলোর রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয়। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব