ফজলুল হক: [২] গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শিল্পকারখানার বর্জ্য তুরাগ নদীতে মিশে দূষিত হয়ে গেছে পানি। ফলে নদীর মাছসহ জলজ প্রাণীর সংক্রামণ বেড়েছে। শিল্পকারখানার বর্জ্যযুক্ত পানির দুর্গন্ধে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে।
[৩] নদীর পানি দূষিত হওয়ায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দুর্বল হয়ে পানির ওপরে ভেসে উঠছে। এলাকাবাসী এসব মাছ ধরে খাওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে।
[৪] কালিয়াকৈর উপজেলার প্রায় চার শতাধিক মিল কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার বর্জ্যযুক্ত পানি প্রতিদিন তুরাগ নদীর পানিতে মিশছে। ইতোমধ্যে কালিয়াকৈরে খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত মকশ বিলের হাজার হাজার একর ফসলি জমি এই শিল্পবর্জ্যের কারণে ফসল উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পচা পানির দুর্গন্ধের কারণে বিলের ধার দিয়ে যাওয়ার সময় পথচারীরা নাক বেঁধে চলাফেরা করছে। একসময় এই বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে এই বিলে কোনো প্রকার মাছ পাওয়া যায় না। শিল্পবর্জ্যে বিষাক্ত পানি তুরাগ নদীর পানিতে মিশ্রিত হওয়ার কারণে নদীর বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে।
[৫] এছাড়া নদীর তীরবর্তী লোকজন তাদের প্রয়োজনে নদীর পানি ব্যবহার করতে পারছে না। নদীর পানি শরীরের কোনো স্থানে লাগলে সেখানে চুলকানিসহ নানা প্রকার রোগ দেখা দেয়। এছাড়া পচা পানির দুর্গন্ধে নদীর আশপাশের বাড়িঘরের বসবাসরত লোকজন বাড়িতেও অনেক কষ্ট করে বসবাস করে আসছে।
[৬] উপজেলাবাসীর দাবি কারখানা থেকে বর্জ্যযুক্ত নিঃসৃত পানি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পরিশোধিত করে তুরাগ নদে ছেড়ে দেয়। এতে লোকজন তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় নদীর পানি ব্যবহার এবং লোকজন পানিবাহিত রোগবালাই থেকে রক্ষাসহ এবং নদীর মাছ এবং জলজ প্রাণীর মড়ক বন্ধ হবে। এতে পরিবেশের বিপর্যয়ও রোধ হবে।
[৭] এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সলিমুল্লাহ্ জানান, নদীর পানি যাতে দূষিত না হয় সেই দিকটা মূলত প্রশাসনের দেখার বিষয়। প্রশাসন শিল্পমালিকদের ডেকে প্রাথমিকভাবে মৌখিক সাবধান করে দিতে পারেন। যদি তারা প্রশাসনের কথা অমান্য করে কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি নদী বা জলাশয়ে ফেলে পানি দূষিত করে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
[৮] তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসন শিল্পমালিকদের ডেকে নিয়ে বসে সমাধান করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়টি ডিসি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মহোদয়ের কাছেও জানানো হয়েছে। সম্পাদনা: সাদেক আলী