শিরোনাম
◈ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ইঙ্গিত: রেকর্ডসংখ্যক কোটিপতি ব্যাংক হিসাব ◈ কাতার ও ফিলিস্তিনের প্রতি অবিচল সমর্থন জানালো বাংলাদেশ ◈ দুবাইয়ে বিকৃত যৌ.নাচার ব্যবসার চক্রের মুখোশ উন্মোচন এবার বিবিসির অনুসন্ধানে! ◈ জনপ্রশাসনের ১৭ কর্মকর্তাকে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে বদলি ◈ ‘আমার নাম স্বস্তিকা, বুড়িমা নই’ ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বস্তিকা ◈ তিন জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার ◈ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আবার বাড়ল ◈ আর্থিক সুবিধা নেওয়ায় কর কর্মকর্তা বরখাস্ত ◈ লড়াই ক‌রে‌ছে হংকং, শেষ দি‌কে হাসারাঙ্গার দাপ‌টে জয় পে‌লো শ্রীলঙ্কা ◈ দুর্গাপূজায় মণ্ডপ পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে আমন্ত্রণ হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের

প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৬:৫৪ সকাল
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ০৬:৫৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাসুদ রানা: মৌলবাদ : সত্য-মিথ্যার সাথে সম্পর্কহীন!

মাসুদ রানা: কোনো আদর্শের বা বিশ্বাসের মৌলিক নীতিসমূহকে অনমনীয়তার সাথে চর্চা করার মতবাদকে বলা হয় মৌলবাদ। মৌলবাদের সাথে সত্য-মিথ্যার কোনো সম্পর্কে নেই। আসলে, সত্য বলে কোনো বস্তু নেই, মিথ্যা বলেও কোনো বস্তু নেই। সত্য হচ্ছে বস্তু, বিষয় বা ঘটনার বস্তুনিষ্ঠ (ড়নলবপঃরাব) বোধ ও বিবৃতি, এবং মিথ্যা তার ব্যতয়। আর, বস্তুজগত যেখানে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল, সত্যও সে-কারণে পরিবর্তনশীল হতে বাধ্য।

তাছাড়া, মানুষের পর্যবেক্ষণ ও বুঝার যে পদ্ধতি আছে, তারও ঐতিহাসিক বিকাশ আছে। ফলে, দিন-দিন মানুষের পর্যবেক্ষণ ও বুঝার পদ্ধতি ও ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্ততঃ এই দু'কারণে সত্য কখনও অনড় হতে পারে না। একটি বিশ্বাস বা আদর্শের মৌলিক নীতি বস্তুনিষ্ঠ হতে পারে কিংবা না-ও পারে। অর্থাৎ সত্য হতে পারে কিংবা না-ও পারে। ফলে, সত্য-মিথ্যা দিয়ে মৌলবাদকে বুঝলে তা সঠিক হবে না। তবে একথা বলা যায় যে, মৌলবাদের অনমনীয়তা এবং বস্তুজগতের ও বস্তুজগত সম্পর্কে মানুষের বোধের ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত পরিবর্তনের তথা নমনীয়তার একটি বৈশিষ্ট্যগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। ফলে, যে-কোনো মৌলবাদ একটি সময়ে সত্যের সহায়ক হলেও, পরবর্তী-কালে প্রতিবন্ধক হিসেবে আবির্ভুত হতে পারে।

বিষয়টি এমন নয় যে, মৌলিক নীতিগুলো সত্যের পরিপূরক থাকলে এটি মৌলবাদ এবং না থাকলে তা মৌলবাদ নয়। বস্তুতঃ সত্য-মিথ্যা নির্বিশেষে মৌলবাদ হচ্ছে অনমনীয়ভাবে মৌলিক নীতির চর্চা বা বাস্তবায়নের মতবাদ। মৌলবাদ মানেই যে ধর্মীয় বিশ্বাসের হবে, তা নয়। 'প্যারাডক্সিক্যাল' মনে হলেও, মৌলবাদী বিজ্ঞানও হতে পারে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করা সত্ত্বেও যদি কেউ প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাসের মৌলিক নীতির প্রতি অনমনীয় থাকে, তাঁর এই অবস্থানকে বৈজ্ঞানিক মৌলবাদ বলা যেতে পারে। এমন বিজ্ঞানীর অভাব নেই, যাঁরা বিজ্ঞানের নানা শাখায় সুপণ্ডিত ও নানা তত্ত্বের স্রষ্টা হওয়ার পরও অতিপ্রাকৃতিক শক্তিতে বিশ্বাস করেন। নোবেল বিজয়ী পদার্থ বিজ্ঞানী অধ্যাপক আব্দুস সালাম ছিলেন এমনি এক বিশ্বাসী বিজ্ঞানী।

প্রায় দেড় দশক আগে লণ্ডনের টয়েনবী হলে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের একটি সেমিনার করেছিলাম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ওপর। ভারত থেকে আমাদের এক বিজ্ঞানী বন্ধু লণ্ডনের ইম্পেরিয়্যাল কলেজে ভিজিটিংয়ে আসার সুবাদে আমাদের সে-সেমিনারে বক্তৃতা করেন। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞানীরা তাঁদের সায়িণ্টিফিক প্রোজেক্ট শুরু করার আগে কলকাতার কালীঘাটে পুজো দিয়ে থাকেন। যহোক, ঐতিহাসিকভাবে ফাণ্ডামেণ্টালিজম বা মৌলবাদ হচ্ছে একটি স্বঘোষিত ক্রিশ্চিয়ান প্রোটেস্ট্যাণ্ট ধর্মবাদ। পরবর্তীতে এই অভিধাটি অনমনীয় ইসলামবাদীদের বেলায় আরোপিত হয়, যেটি তারা কখনও নিজেদের প্রতি ব্যবহার করে না।

যে-কোনো বিষয়ের মতোই মৌলবাদের বিষয়ে নিশ্চায়ক মন্তব্য করার আগে বিষয়টির অধ্যয়ণ ও ক্রিটিক্যাল উপলব্ধি প্রয়োজন। আগ্রহীদেরকে Marty and Appleby (১৯৯১) সম্পাদিত 'Fundamentalims Observed' বইটি পড়তে বলবো। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৮৭২ হলেও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উদ্দীপক। ২৩/১২/২০২০। লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়