স্পোর্টস ডেস্ক : [২] করানোভাইরাসের কারণে দীর্ঘ ৯ মাস বন্ধ থাকা দেশের ফুটবল অবশেষে ফেডারেশন কাপ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে। ১৩ দলের এই টুর্নামেন্টে শুরুর আগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র ভুগছিল আর্থিক সংক্রান্ত জটিলতায়। যদিও শেষ পর্যন্ত সুখবর মিলেছে। দলটিতে অর্থায়ন করতে চলেছে এক জাপানি প্রতিষ্ঠান। তাও আবার দলটির এক জাপানি খেলোয়াড়ের হাত ধরে। তার নাম ইউসুকে কাতো।
[৩] ২০১৮ সালে বাংলাদেশে কর্মরত জাপানি বন্ধুর হাত ধরে ঢাকায় আগমন কাতোর। মুক্তিযোদ্ধায় ট্রায়াল দেন তিনি। তবে তার আগে বিশ্বের সাতটি দেশের ঘরোয়া ফুটবলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ৩৪ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার জন্ম নেন জাপানের ওসাকায়। হাইস্কুল শেষ করে আর্জেন্টিনায় চলে যান। বুয়েন্স আয়ার্সে হুরাকানের জুনিয়র টিমের হয়ে মাঠে নামেন। এরপর প্রিমেরা ডিভিশনেও খেলেন দলটির জার্সিতে। আর্জেন্টাইন লিগে ডিফেনসরেস ডি বেলেগরানোর হয়েও মাঠে নামার অভিজ্ঞতা হয় কাতোর।
ম্যারাডোনা-মেসিদের দেশ থেকে ফিরে যান নিজ জন্মভূমিতে। ২০১১ সালে নাম লেখান জাপান ফুটবল লিগের দল বিয়াকো শিগায়। পরের বছর ভারতীয় দল ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবে খেলতে আসেন কাতো। একই বছর পাড়ি জমান থাইল্যান্ডে। থাই লিগে ছয় দলের হয়ে খেলেন। রয়েছে হংকং, মঙ্গোলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতাও।
[৪] ২০১৮-১৯ মৌসুমে মুক্তিযোদ্ধার হয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে পা রাখেন। দলটির জার্সিতে ২১ ম্যাচে ৭ গোল ও ৫টি অ্যাসিস্ট করেন। পরের মৌসুমে যোগ দিয়েছিলেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। এরপর আবারও ফিরেছেন মুক্তিযোদ্ধায়।
করোনার বড় ধাক্কা খাওয়ার পর পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান না পাওয়া নিয়ে ভুগছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। ঠিক তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সেভ মুক্তিযোদ্ধা’ নামে একটি পেজ খুলে আকুতি জানিয়ে শিরোনামে এসেছিলেন কাতো। শেষ পর্যন্ত এ-উইং তাগুচি কোম্পানি লিমিটেড (এটিসি) এগিয়ে এসেছে দলটির পৃষ্ঠপোষক হতে। ফেডারেশন কাপ শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে বিষয়টি সামনে এসেছে। ১০ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা) দিয়েছে জাপানি প্রতিষ্ঠানটি।
[৫] দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দল চালাতে যে অর্থ প্রয়োজন তার তুলনায় খুব কম সংখ্যার অর্থ মিললেও প্রতিষ্ঠানটির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কাতো। তিনি বলেন, সত্যি আমি এ-উইং তাগুচি কোম্পানির কাছে চির কৃতজ্ঞ। এমন পরিস্থিতিতে তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের ধন্যবাদ দেয়ার মতো ভাষা নেই। ফেডারেশন কাপে ‘ডি’ গ্রæপে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিপক্ষ ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান স্পোর্টিং। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে কাতোর উপর।
[৬] তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল খেলায় অংশ নেয়া। আমরা সবাই একটি ভাষা বুঝি। সেটি হচ্ছে ফুটবল। এখন আমাদের দল খেলায় ফিরেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সমর্থন করেছেন। দল হিসেবে মাঠে নেমে তাদের প্রতিদান দিতে চাই। ২২ ডিসেম্বর টুর্নামেন্ট শুরু হলেও আগামী ২৭ ডিসেম্বর নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠের লড়াইয়ে নামতে হবে মোহামেডানের বিপক্ষে। গ্রæপ পর্বের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ৩০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিপক্ষ আবাহনী। - আরটিভি নিউজ