আসিফুজ্জামান পৃতির: [২] এক দশকের আগে বর্তমান সপ্তাহেই তিউনিশিয়ার তরুণ ফল ব্যবসায়ী মুহাম্মদ বুয়াজিজি একটি প্রাদেশিক সদরদপ্তরের সামনে নিজ শরীরে আগুন দেন। এই কাজটি করে পুলিশ তার ফলের গাড়ি কেড়ে নেয়ায়। বুয়াজিজির শরীরের আগুন ছড়িয়ে পড়ে আরব দেমটির সব কোনায়। ১৭ ডিসেম্বর থেকে বুয়াজিজির মৃত্যুর দিন ৪ জানুয়ারির মধ্যে পাল্টে যায় পুরো তিউনিশিয়া। অগ্নিগর্ব দেশটি থেকে উৎখাত হন দশকের পর দশক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা জেইন আল-আবিদিন বেন আলি। দ্য গার্ডিয়ান
[৪] এই আগুন শুধু উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে আটকে থাকেনি। ছড়িয়ে পড়ে মিসর, বাহরাইন, ইয়ামেন, লিবিয়া এবং সিরিয়ায়। বিক্ষোভ বিপ্লবে পরিণত হতে সময় নেয়নি। বুয়াজিজির মতো দিনে ২ পাউন্ড আয় করা পরিবারের অভাব ছিলো না আরব পেনিনসুলায়। আরবরা আর বঞ্চনার শেকলে বেঁধে থাকা অবস্থায় জীবন যাপন করতে চায়নি। এর ফল হয়েছে মারাত্মক। আমরা দেখেছি তিউনিশিয়া ছাড়া আর কোনও দেশ সফল হয়নি। সরকারের পতন হয়েছে বটে, কিন্তু যুদ্ধবিদ্ধস্ত নরকে পরিণত হয়েছে লিবিয়া। ইয়ামেনের বাতাসে ঘুরে বেড়ায় ক্ষুধার্থ শিশুদের কান্না। রূপকথার সিরিয়া পরিণত হয়েছে জীবন্ত নরকে। উত্থান হয়ে আবার ধ্বংসও হয়ে গেছে আইএস। মিসরে কিছুদিনের জন্য বিপ্লবী সরকার ক্ষমতায় এলেও স্ফিংসের মতো আবারও ক্ষমতা আকড়ে বসেছে সামরিক বাহিনী।
[৫] কেউ এখন জানে না সিরিয়া কে বা কারা চালায়? লিবিয়ায় সরকার আসলে কয়টি? ইয়ামেনে কোন আইনে হুথিদের বিদ্রোহী বলা হয়? পশ্চিমা দেশগুলো আরব বসন্তের আড়ালে মধ্যপ্রাচ্যকে বানিয়েছে নিত্য নতুন অস্ত্র পরীক্ষার ক্ষেত্র। যে আরব বসন্তে ফোটার কথা ছিলো বিপ্লবের লাল ফুল, বিদ্রোহ আর প্রেম মিলেমিশে ছাড়খার হয়ে যাবার কথা ছিলো, সে বসন্ত আসেনি। বিষাক্ত বাতাসের কঠোরতার সঙ্গে সেখানে মিশে যায় শেকলবন্দী ইয়াজিদি তরুণীদের কান্না।