আবদুন নূর তুষার: কামালা বা কমলা হ্যারিসের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার সাথে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের বিষয়টি কিন্তু বেশ দূরে।
[১] আমেরিকানরা তাকে কমলা বলে না, সে নিজেও নিজেকে কামালা বলে। প্রোপার নাউন বা নামপদ, যিনি অধিকারী তিনি যেভাবে লেখেন ও উচ্চারণ করেন সেভাবেই সঠিক।
[২] তিনি সরাসরি ভোটে নির্বাচিত না। লোকে বাইডেন সাহেবকে ভোট দিয়েছে। বাইডেন জিতলে তিনি জিতবেন, বাইডেন হারলে তিনি হারবেন। অর্থাৎ এই হারজিতে তার অংশ আছে বটে কিন্তু সেটা পরোক্ষ। এটা বাইডেনের রথে চড়ে বিজয়।
[৩] ট্রাম্পকে অপসারণে আমেরিকান জনগনকে যথেষ্ট বেগ পোহাতে হয়েছে এবং শেষে ঝুলে থাকা প্রদেশগুলোতে বা স্টেটগুলোতে ভোটের ব্যবধান চুল পরিমাণ। অন্য বহু জায়গাতেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে এবং প্রায় অর্ধেক আমেরিকান ট্রাম্পের পক্ষেই আছে। ডাকে পাঠানো ভোট দিয়ে বিরাট সংখ্যক ভোটারকে ভোট প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসতে পারায় ডেমোক্রেটরা এবার সামান্য ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছে।
[৪] এই একইভাবে অ্যালগোরের ভোট কিন্তু জেব বুশ গোনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং পরে আদালত বুৃশের পক্ষে গিয়ে অ্যাল গোর এর সময় ভোট গোনায় অসম্মতি দেয়। এবারের মতো সব ভোট গুণলে হয়তো অ্যালগোর প্রেসিডেন্ট হয়ে যেতেন।
[৫] কামালা হ্যারিস জিতেছেন বাইডেনের কারণে এবং ট্রাম্পজনিত অস্বাভাবিক এক পরিস্থিতিতে।
[৬] সরাসরি ভোটে গতবার হিলারী প্রেসিডেন্ট হলে বরং নারীর ক্ষমতায়ন হতো।
[৭] এখনো পর্যন্ত আমেরিকাতে প্রধান বিচারপতি কোনো মহিলা হননি।
[৮] সিআইএ এফবিআইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো সংস্থার প্রধান কোনো নারী হননি বহুদিন। ট্রাম্প বরং ২০১৮ সালে একজন নারী প্রধান নিয়োগ দিয়েছিলেন সিআইএতে।
[৯] আমেরিকার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সম্ভবত মাত্র ৪৩ জন গভর্নর হয়েছেন মেয়েরা। তাদের মধ্যে অনেকে ভারপ্রাপ্ত।
[১০] এ পর্যন্ত টোনি নাথান, সারা পেলিন, জেরাল্ডিন ফেরারো ও কামালা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন। জিতেছেন কেবল কামালা হ্যারিস।
আমেরিকা নারী নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুত কিনা সেটা একটি বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন। কে সেকেন্ড জেন্টলম্যান এটা নিয়ে গবেষণা না করে বরং এটা চিন্তা করা দরকার এতোবড় গণতন্ত্র ও অধিকারের দেশে নারীর রাজনৈতিক ও ক্ষমতার অধিকার এতো শোচনীয় কেন? আমেরিকা আমাদের মতো একটি বৃহৎ ও একক সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতির দেশ না। সেখানে তাই ধর্ম ও গায়ের রং অনেক বেশি পরিমাণে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এখনো সেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে আলাদা করে অধিকারের সংগ্রাম করতে হয়। তাই ফেসবুক, গুগল বা তথাকথিত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নয় বরং ভিন্নমত ভিন্ন চিন্তার আমেরিকানদের লেখা ও কথা জানার চেষ্টা করেন। কামালা যদি সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন সামনে কোনোদিন সেদিন নারীর ক্ষমতায়ণ নিয়ে কথা বললে সঠিক হবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :