স্নায়ুযুদ্ধোত্তর বিশ্বে একক পরাশক্তি হিসেবে বিশ্ব নেতৃত্বে থাকা সর্ববৃহৎ ও সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কেন্দ্র করে নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে দেশের অভ্যন্তরে কিংবা দেশের বাইরে কৌতূহল বিরাজ করে।দিন কয়েকের মধ্আযে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কাঙ্খিত নির্বাচন। আর এই নির্বাচনের ফলাফলকে ঘিরে চলছে বিভিন্ন গবেষণা ও বিশ্লেষণ,অন্যদিকে নির্বাচনী ফলাফলের পূ্র্বাভাস প্রকাশেও পিছিয়ে নেই বিশ্লেষকরা।আর এই সকল পূর্বাভাস প্রদানে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন মডেল যার মধ্যে পপুলার ভোট মডেল, ইলেক্টোরাল ভোট মডেল কিংবা প্রাইমারি মডেল অন্যতম।মার্কিন নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় 'কে জিতবে?'বা 'নির্বাচনী দৌড়ে কে এগিয়ে আছে' শব্দগুচ্ছ যেন ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে।আর তাই এ নিয়ে চলতে থাকে নানা জল্পনা-কল্পনা।যেকোন দেশের নির্বাচনেই দলগুলোর জয়-পরাজয়ের সম্ভাবনা আলোচনা করার পূর্বে প্রসঙ্গত সেই রাষ্ট্রের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে হয়।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ শক্তিধর এই রাষ্ট্রটির নির্বাচন পদ্ধতিকে বড় বেশি জটিল পদ্ধতি বলা হয়ে থাকে।আর এই নির্বাচনের সাথে জড়িত পপুলার ভোট, ইলেক্টোরাল ভোট কিংবা সুপার টুইসডে নামের চমৎকার সব শব্দগুচ্ছ।
মার্কিন নির্বাচনে নাগরিকদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়না বরং জনগণের ভোটের মাধ্যমে ইলেক্টোরাল কলেজ বা নির্বাচকমন্ডলী নির্বাচিত করা হয়।জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে থাকেন।কোন রাজ্যে কতজন নির্বাচক থাকবেন তা ঐ রাজ্যের জনসংখ্যার উপর নির্ভরশীল।সর্বাধিক জনসংখ্যা থাকায় ক্যালিফর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে সাবচেয়ে বেশি (৫৫টি) ইলেকটোর রয়েছে যেখানে আলাস্কা এবং নর্থ ড্যাকোডায় রয়েছে মাত্র ৩টি ইলেকটোর।নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারাদেশে যেসকল ভোট পান সেগুলো পরিচিত পপুলার ভোট হিসেবে আর ইলেকটোরের নিকট থেকে যে ভোট তা ইলেক্টোরাল ভোট নামে পরিচিত।কোন প্রার্থী যে রাজ্যে সর্বাধিক পপুলার ভোট পেয়ে থাকেন তিনি সে রাজ্যের সকল ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যাবেন, আর এই অদ্ভূত পদ্ধতির কারণেই মার্কিন নির্বাচনকে অনেক বিশ্লেষক ' আনপ্রেডিক্টাবল' বলে থাকেন।উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো প্রার্থী যদি ক্যালিফর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে ৫০.১% পপুলার ভোট পান তবে সে রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোটও তার ঝুলিতে পড়বে।আবার কোন প্রার্থী বেশি পপুলার ভোট পেলেই নির্বাচিত হবেন তা নয় যেমন ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০৬ টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে প্রসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন যদিও তিনি ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারী ক্লিনটন থেকে ৩০০০০ ভোট কম পেয়েছিলেন।অর্থাৎ ৫৩৮ টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে মাইন ও নেব্রাসকা অঙ্গরাজ্য বাদে অন্যান্য রাজ্যে প্রাপ্ত ভোট যোগ করে যে প্রার্থীর মোট ইলেক্টোরাল ভোট ২৭০ বা তার বেশি হবে তিনিই চূড়ান্তভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
বিরল এই ইলেক্টোরাল পদ্ধতির কারণেই গত ৫টি নির্বাচনের মধ্যে ২টি নির্বাচনে অধিক পপুলার ভোট পেয়েও চূড়ান্ত বিজয়ী হতে পারেননি আল গোর কিংবা হিলারী ক্লিনটন।মার্কিন নির্বাচনের সাথে জড়িত অন্য একটি চমৎকার বিষয় হচ্ছে 'সুপার টুইসডে'।নির্বাচনের বছরে ফেব্রুয়ারি- মার্চ মাসের মধ্যে কোনো এক মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি রাজ্যে প্রার্থী নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয় আর এই দিনকে ই 'সুপার টুইসডে'বলা হয়। কোনো প্রার্থী সুপার টুইসডে তে যত বেশি ভোট পাবে, চূড়ান্ত মনোনয়নে সে তত বেশি এগিয়ে থাকবেন।পরবর্তীতে সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়।এই বছর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।এর মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বব্যাপী বিরাজমান ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি ও করোনা ভাইরাস মুখোমুখি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
করোনা মহামারীর কারণে প্রায় মার্কিন নাগরিকেদের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে এর ছায়া প্রেসিডেন্ট ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট বিতর্কে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।সঙ্গত কারণেই মহামারীর উন্মোচিত বিপরীতমুখী দ্বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকেও প্রভাবিত করবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।তাছাড়া জো বাইডেনের রানিং ম্যাট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে নির্বাচিত করা যুক্তরাষ্ট্রে অশ্বেতাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকেন্দ্রিক সৃষ্ট 'ব্ল্যাক লাইফস ম্যাটার' আন্দোলনের ভোট নিজের ঘরে আনার প্রচেষ্টা বলে আপাতত মনে হচ্ছে।কিন্তু এটি তাঁর পরাজয়ের কারণও হতে পারে।কারণ ৭৭ বছর বয়সী জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে যাওয়ার পর অসুস্থ হলে কিংবা দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন কমলা হ্যারিস যা পুরুষ শাসিত মার্কিন সমাজ মেনে নিবে বলে মনে হচ্ছেনা কারণ মার্কিনীরা তাদের নেতৃত্বে কোনো নারীকে নির্বাচিত করবে বলা যায়না যার প্রমাণ গত নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের বিপুল জনপ্রিয় ভোট পাওয়া সত্ত্বেও চূড়ান্ত ফলাফলে হেরে যাওয়ায় প্রতীয়মান হয়।অন্যদিকে,ট্রাম্প শাসনকালে বর্ণবাদ, শ্বেতাঙ্গ সুপ্রিমেসি,১১.১ শতাংশ বেকারত্ব হার,করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থতা,চীনের সাথে বাণিজ্য ঘাটতিসহ বিভিন্ন বিষয় নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাকেও ক্ষীণ করবে বলে বিশ্লেষকরা আগাম জরিপ প্রকাশ করছেন।এছাড়া মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোতেও ভোটার সমর্থনের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে ট্রাম্প প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৫/৬ জনের ভোট নিশ্চিত করতে পারছেন।যা থেকে বলা যায়, নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক জনগণ ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবে।অর্থাৎ পরবর্তী ৪ বছরের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনঃ নির্বাচিত হবেন নাকি হোয়াইট হাউসের দায়িত্বে আসবেন নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তা নির্বাচন ই নির্ধারণ করতে যাচ্ছে।
পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী
অ্যালান লিচম্যান, আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক, ১৯৮৪ সাল থেকে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল বিষয়ে যে ভবিষ্যৎবাণী করে আসছেন ঠিক তা ই ঘটছে (এক্ষেত্রে ২০০০ সালের নির্বাচনী ফলাফল ব্যতিক্রম)।ওই নির্বাচনের পর থেকে তিনি প্রেডিকশন প্রদান মেথডোলজি তে পপুলার ভোটের পাশাপাশি ইলেকটোরাল ভোট ও সংযুক্ত করেন।২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি জোবাইডেন এর জয়ী হওয়ার প্রতি যুক্তি তোলে ধরেন।তাঁর কি টু দ্যা হোয়াইট হাউজ মেথডলজিতে করোনা মহামারি, সামাজিক অস্থিরতা,পুলিশ হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু প্রভৃতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেনকে এগিয়ে রাখবে বলে জানিয়েছেন। যদি তরুণ ভোটার কিংবা সংখ্যালঘু জনগণ কে সাপ্রেস করা না হয় এবং বৃহৎ কোনো শক্তি মধ্যস্থতা না করে তবে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি জানিয়েছেন।
অন্য একজন অধ্যাপক,মার্কিন নির্বাচন নিয়ে যার ট্র্যাক রেকর্ড অত্যন্ত আশ্চর্যজনক,তিনি হলেন নিউইয়র্কের স্টনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হেলমুট নরপোথ।১৯৯২ সাল থেকে যে মডেল অনুসারে তিনি মার্কিন নির্বাচন সম্পর্কে প্রেডিকশন করেছেন তা গত ৬টি প্রেসিডেন্টসিয়াল নির্বাচনের মধ্যে ৫টি তেই সফল হয়েছে।২০১৬ সালে তাঁর গবেষণায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ দেখিয়েছিলেন যা বাস্তবেও সত্য প্রমাণিত হয় । নরপোথ এই বছরের গবেষণায় প্রাইমারি মডেলে গুরুত্ব দিয়ে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা ৯১ শতাংশ প্রেডিক্ট করেছেন। এছাড়াও তিনি সাম্প্রতিক ট্রেন্ড 'দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া' মডেলে গুরুত্ব দিয়ে জানিয়েছেন, ২০২০সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ই জয়ী হবেন,এর কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না।তিনি তাঁর প্রেডিকশন 'আনকন্ডিশনাল এবং ফাইনাল' বলেও উল্লেখ করেন এবং তিনি কোনো সীমাবদ্ধতার বিষয়ও উল্লেখ করেন নি।
গত ২ রা অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।আপাতদৃষ্টিতে তিনি সেরে উঠেছেন বলে মনে হচ্ছে যদিও,তথাপি প্রেসিডেন্ট দৌড়ে এর প্রভাব কেমন হবে তা নিয়ে বিশ্লেষকগণ ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। উচ্চতা,ওজন সহ শারীরিক অন্যান্য দিক বিবেচনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন।করোনা থেকে আরোগ্যলাভ করলেও ট্রাম্প করোনা পরবর্তী বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধায় ভুগবেন যা তাঁর প্রতিপক্ষের প্রজ্বলিত বিষয়গুলো মোকাবিলা করার সামর্থ্য দুর্বল করে দিতে পারে।যদিও বিবিসি এর এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিশ্বের প্রথম করোনা আক্রান্ত রাষ্ট্রনেতা বরিস জনসন করোনা আক্রান্ত থাকাকালীন সময়ে, পূর্ববর্তী সময় অপেক্ষা জনগণের ব্যক্তিগত সমর্থন হারে অধিকতর পছন্দনীয় হয়ে উঠেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সংকটাপন্ন অবস্থার প্রতি সে দেশের জণগণের সহানুভূতি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নেট সমর্থন শতকরা ৪ ভাগ থেকে বেড়ে শতকরা ১০ ভাগে পৌঁছে যায়।মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতি সৃষ্ট সহানুভূতি কতটুকু প্রভাব ফেলবে তা জানার জন্য অবশ্যই নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।তবে উল্লেখ থাকে যে, ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণের ভোটে হেরে গিয়েও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন।
বাইডেন- ট্রাম্প বিতর্ক
গত ২৯ শে সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন প্রেসিডেন্টসিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছেন। উষ্ণ ও তপ্ত এই বিতর্কে জাতি ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে পরস্পর পরস্পরকে নিজেদের বাণঅস্ত্র প্রয়োগ করে বিজিত করার চেষ্টা করেন।তাছাড়া এ বিতর্কে প্রতিপক্ষের বক্তব্য চলাকালীন পুনঃ পুনঃ বিঘ্ন ঘটানোর কারণে সভাপতি ক্রিস ওয়ালেস কর্তৃক ট্রাম্প বেশ কয়েকবার তাড়িত হয়েছেন। অবিরাম বিঘ্নিত হয়ে কোনো একটি পয়েন্টে বাইডেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বলেন, "উইল ইউ শাট-আপ,ম্যান?" নির্বাচনের পূর্বে প্রেসিডেন্টসিয়াল এই ডিবেট, গ্ল্যাডিয়েটোরিয়াল কমব্যাটের মতই যার ফলাফল নির্বাচনকেও প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করা হয়।প্রতিটি নির্বাচনের আগেই তিনটি টিভি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বিতর্কে রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ৮৪ মিলিয়ন দর্শক টিভি বিতর্কটি উপভোগ করেছিল যেখানে মিলিয়ন সংখ্যক দর্শক যারা ফেসবুক, ইউটিউব, অন্যান্য অনলাইন মাধ্যম এবং পার্টি কিংবা বারে উপভোগ করেছেন তার সংখ্যা অন্তর্ভূক্ত হয়নি।তারমধ্যে জনাব ট্রাম্প এবং জনাব জো বাইডেনের রানিং ম্যাট হিসেবে সমর্থিত মাইক পেন্স এবং সিনেটর কমলা হ্যারিস ও তাদের ভাইসপ্রেসিডেন্ট বিতর্কে করোনা মহামারিতে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা বিষয়ক বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন হার স্থির
ট্যালিগ্রাফ পুল ট্র্যাকার প্রদত্ত তথ্যমতে,গত কয়েক মাস ধরেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন শতকরা ৪০ শতাংশেই স্থির থাকছে।আলজাজিরা কর্তৃক পরিচালিত একটি ভোট পরিসংখ্যানের তথ্যে উঠে এসেছে,শতকরা ৫৬ শতাংশ জনগণের ভোট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপক্ষে রয়েছে।তবে উল্লেখ থাকে,সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় জনগণের সাথে সরকারের যৌথ পদক্ষেপের লক্ষ্যে " র্যালি এরাউন্ড দ্যা ফ্ল্যাগ" আয়োজনের পর থেকে এই চিত্র কিছুটা পরিবর্তিত হতে শুরু করেছে।
গত নির্বাচন সম্পর্কে বিভিন্ন বিতর্ক,রাশিয়ার গোপন সমর্থন কিংবা নানাবিধ কূট-কৌশলের অভিযোগ থাকলেও কিছু জনগণ সত্যিই ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে তাদের মত পরিবর্তন করেছে।ক্ষমতা গ্রহণের অষ্টম দিনের মধ্যে তাঁর সমর্থন হারে মারাত্মক মন্দার সৃষ্টি হলেও পরবর্তী সময়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি অনেকের চেয়েও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যদিও এর হার শতকরা ৪০ শতাংশ কিংবা এর কিছুটা বেশি ছিল।৪ বছর পূর্বে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেমন করে ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারী ক্লিনটনকে রাজনৈতিক খেলায় পরাজিত করে ইলেক্টোরাল ভোটে এগিয়ে থেকে হোয়াইট হাউসের কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন ঠিক তেমনি ২০২০ নির্বাচনেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটছে কি না সেটা দেখার জন্য অবশ্যই চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের দিন অবধি অপেক্ষা করতে হবে।
লেখক পরিচিতি : স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়